বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফুলবদল / Jumping Jill

বাঘ তিহারে। কিন্তু বাঘের বানর সেনারা এখনো আছেন বীরভূমে, তাই কেষ্ট ম্যাজিক এখনো কিছুটা হলেও আছে। যেমনটা হয়েছে আজ দুবরাজপুরে।

বীরভূমের দুবরাজপুর, গত বিধানসভা নির্বাচনে সেই আসন তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে ৪,০০০ ভোটের ব্যবধানে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অনুপ কুমার সাহা। তিনি এখনও বিজেপিতে থাকলেও, তাদের মনোনীত বিজেপি প্রার্থী এই মুহুর্তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েতের আসন জিতে বাঘের দলে যোগ দিয়েছেন।

ঘটনা বীরভূমের দুবরাজপুরের পাদুমা পঞ্চায়েত সমিতির ১৭ নম্বর আসনের। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গিয়েছে। এর ফলে লড়াই দাঁড়ায় বিজেপি এবং সিপিএমের মধ্যে। কিন্তু মঙ্গলবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে একেবারে শেষ মুহূর্তে সিপিএম প্রার্থী তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওই আসনে জয়লাভ করেন বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মী মুর্মু।

কিন্তু জেতার পরেই ছন্দপতন। বিজেপির টিকিটে জিতে টুকুস করে ফুল বদলে ফেললেন লক্ষী দেবী। সাথে বললেন, “আমি স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিলাম”।

কংগ্রেসের বাইরন বিশ্বাস তাও দল বদলাতে তিন মাস নিয়েছিলেন, কিন্তু লক্ষী মুর্মুর বিজেপি থেকে তৃণমূলে ঝাঁপ দিতে ঘন্টা তিনেকও লাগেনি। সবই হয়ত বাঘ বাহিনীর কামাল।

কিন্তু আমরা রাইজ অফ ভয়েসেস, তাই খবরটা এখানেই শেষ করতে পারি না। আমাদের প্রশ্ন থাকবে সিপিআই(এম) প্রার্থী শেষ মুহুর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন কেন, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ হোক। গাঁ-গঞ্জে একলা প্রার্থীর পক্ষে শাসকের দেওয়া লাগাতার হুমকি ও মানসিক চাপের সামনে লড়াই করা সহজ কথা নয়, একথা জেনেও আমরা বলছি বাম নেতৃত্বের কাছে আরও দৃঢ়চেতার প্রার্থী নির্বাচন আশা করে মানুষ। এমনকি স্থানীয় বাম নেতৃত্ব বা জেলার বাম নেতৃত্বের তরফে যদি মনোনয়ন জমা করা প্রার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে কোন ঘাটতি থেকে থাকে তবে তাও পর্যালোচনা করা জরুরি। কারণ নীতিহীন ফুলবদল আজ বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। এর থেকে বাংলার মানুষকে বাঁচতে হলে বামেদেরকে অবশ্যই আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে এসে মানুষকে বিকল্প রাস্তা দেখাতে হবে।

অবশ্য বামেরা যে বিকল্প রাস্তা একদম দেখাচ্ছে না তাও নয়।

ভদ্রলোকের নাম সঞ্জীব মল্লিক। ঐ বীরভূমের মাটিতেই অনুব্রত বাহিনীর চোখে চোখ রেখে এখনও সিপিআই(এম) করেন। গত পৌরসভা নির্বাচনে রামপুরহাট পৌরসভার ২ নাম্বার ওয়ার্ডে তিনি শাসকের চক্রান্তে জেলবন্দী হয়েও সেই অবস্থাতেই ভোটে জিতেছিলেন। আর এখনো তিনি পুরো বীরভূম জেলায় জয়ী একমাত্র বিরোধীদলের কাউন্সিলর।

আমরা চাইবো সঞ্জীব মল্লিকদের ভিড়ে লক্ষ্মী মুর্মুদের দলবদলের রাজনীতি হারিয়ে যাক।

তবেই বাংলা পালটাবে।

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস