মাইক্রোফিনান্স মহাজন / The Face of Peasant Exploitation

আজ আমরা গত এক দশকে গ্রামবাংলা জুড়ে মাইক্রোফিনান্স এবং মহাজনী ব্যবসার রমরমা এবং বিস্তার প্রসঙ্গে একটু বিশদে কিছু কথা বলতে চাই। কারণ আমাদের মনে হচ্ছে “লাঙ্গল যার জমি তার” আন্দোলনের পীঠস্থানেই জমি হারাতে হারাতে কৃষকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছে যা ভবিষ্যতে আমাদের রাজ্যের খাদ্য নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করবে। আমরা আবার ষাট-সত্তরের দশকের মত, খাদ্যশস্য-শাকসবজি ইত্যাদির যোগানের জন্য দেশের অন্যরাজ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ব। আর অতিরিক্ত পরিবহনের খরচ বাবদ এসবের দামও বেড়ে যাবে অনেকটাই। ফলে আজ আমরা যারা তথাকথিত শহুরে শিক্ষিতের দল “ওরা থাকে ওপারে” মনোভাব নিয়ে “মামুলি” চাষাভুষার সমস্যা ও লড়াই নিয়ে জানতে ও আলোচনা করতে আগ্রহ পাচ্ছি না, বরং মূলস্রোতের সংবাদমাধ্যম গুলির দাসানুদাস হয়ে সোডিয়াম-পটাসিয়ামের ওঠানামার গপ্পে দাঁত কেলাচ্ছি, অথবা পর্দায় পর্দায় জমাটি সান্ধ্য বিতর্কের আসরে মজে থাকছি ও মজা লুটছি তাদের অনেকেরই পাতে ভবিষ্যতে ভাত নাও পড়তে পারে।

মাস খানেক আগেও আমরা যারা অন্নদাতাদের সমর্থনে ফেসবুক পোস্ট বা ট্যুইট করে ঘন্টায় ঘন্টায় লাইক কমেন্ট ও শেয়ার গুনছিলাম এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুএন্সার হওয়ার স্বপ্ন বুনছিলাম, সেই আমাদের বুঝতে হবে লড়াইয়ের ক্ষেত্রটা আসলে সামাজিক মাধ্যম ছাড়িয়ে, রাস্তা-মাঠ-ঘাট পেরিয়ে, পাড়ার আলিগলি হয়ে সবশেষে আমাদের সবার রান্নাঘরে এসে ঠেকেছে। আর এটাই বর্তমান কিস্তির নান্দীমুখ।

ক্ষুদ্রঋণ বা মাইক্রোফিনান্স ব্যবসার অথবা মহাজনী ব্যবস্থার প্রাথমিক শর্ত হল এমন কিছু মানুষের টাকার দরকার যাদের প্রথাগত ব্যাঙ্কিং পরিকাঠামোতে ঋণ পাওয়া সম্ভব নয়, কারণ তারা বেশীরভাগই অসংগঠিতক্ষেত্রে কাজ করেন এবং যথাযথ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, কোল্যাটেরাল সিকিউরিটি, জামানত ইত্যাদি এদের থাকে না, অথবা এদের বসবাস এমন কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে যা প্রথাগত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার পরিধি ও বিস্তারের বাইরে। মানে সোজাকথায় গ্রাম বাংলায় মাইক্রোফিনান্স ও মহাজনী রমরমার প্রথম কারণ: গ্রামবাংলার মানুষের দিনগুজরানের জন্য যথাযথ উপার্জন না হওয়ায়, টাকা ধার করবার প্রয়োজন পড়েছে এবং দ্বিতীয় কারণ হল সেই ধার দেওয়ার জন্য কোন প্রথাগত ব্যাঙ্কিং পরিকাঠামো এগিয়ে আসছে না বা নেই।

এখন আমরা প্রত্যকেই জানি বাংলার গ্রাম-গঞ্জের মানুষের প্রধান জীবিকা হল কৃষি। এই মুহুর্তে বাংলায় যে নতুন করে কৃষি সঙ্কটের সূচনা হয়েছে তা আমরা আমাদের “বাংলার খুঁটিনাটি”র আগের কয়েকটি কিস্তিতে তুলে ধরেছি। এর পিছনে একদিকে যেমন সারের কালো বাজারি কিম্বা ফসলের ন্যায্য ন্যুনতম মূল্য না পাওয়ার মত কারণ গুলি রয়েছে ঠিক তেমনই যেকটি ফসলে সরকারী সহায়ক মূল্যের ব্যবস্থা আছে (মূলতঃ ধান) সেখানে কুপন বিলি ব্যবস্থায় শাসক ঘনিষ্ঠদের দাপাদাপি ও অনৈতিক আধিপত্যের কারণে রয়েছে দাম না পাওয়ার অনিশ্চয়তা। সাধারণ চাষীদের একটা সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ সরকারী মান্ডির বাইরে সহায়ক মূল্যের থেকেও কম দামে ফসল বেচতে বাধ্য হচ্ছেন এবং ফলে তাদের আয় কমছে। এরসাথে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মার মানে বন্যা-খরা অথবা নিম্নচাপের আকস্মিক ঝড়বৃষ্টিতে ফসল নষ্টের মত ঘটনা। মানে শুধু ফসলের দাম না পাওয়ার অনিশ্চয়তাই নয়, কৃষক পরিবার গুলিকে লড়তে হয় প্রাকৃতিক জলবায়ুজনিত অনিশ্চয়তার সাথেও। এমনিতেই কৃষিকাজ মরশুমি হওয়ায় সারাবছর কাজ থাকে না, তারওপর এভাবে আয় বা লভ্যাংশ কমে যাওয়ায় অথবা ক্ষয়ক্ষতির কারণে মোটের ওপর চাষবাস করে কৃষক পরিবার গুলির সারাবছর আর চলছে না। রুটি রুজির জন্য তাঁরা ঝুঁকে পড়ছেন নানা রকমের অকৃষিক্ষেত্রে। পরিবারের অনেকে একরকম বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছেন ভিনরাজ্যে ভিনদেশে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে। ঘরের মেয়ে বউরাও হেঁসেল ঠেলে জড়িয়ে পড়ছেন নানা ধরণের স্বনির্ভর গোষ্ঠী, সেলাই- হাতেরকাজ জনিত পেশায়। হাইওয়ের ধারে অথবা বড় রাস্তার ওপর কেউ কেউ চালাচ্ছেন বিড়ি-সিগারেট কিম্বা চায়ের দোকান, ভাত-রুটির হোটেল। আর এসবের কারণেই তাদের দরকার পড়ছে ধার নেওয়ার।

এখন আমরা যারা দিল্লী রোড, বোম্বে রোড ধরে গাড়ি করে সা সা করে যেতে যেতে অথবা ট্রেনে জানলার ধারে বসে বা দরজায় দাঁড়িয়ে মাঠেঘাটে ছেলে-ছোকরা মেয়ে-বউদের চাষবাস করতে দেখি তারা সবাই কিন্তু সরকারের খাতায় কৃষক নন। আমাদের রাজ্যে মুলতঃ তিন ধরণের মানুষ জমিতে চাষবাস করেন। এক যারা কৃষি জমির মালিক। দুই যারা কৃষি জমির মালিককে ফসল বা লভ্যাংশের একটা অংশ দিয়ে নিজেরা সেই জমি কয়েক বছরের জন্য লিজ নিয়ে চাষ করেন। আর তিন যারা এক এবং দুই উভয় ক্ষেত্রেই জমিতে চাষ আবাদের কাজে দৈনিক মজুরিতে জন-মজুর খাটেন। সরকারী খাতায় প্রথম জন হলেন কৃষক, দ্বিতীয় জন হলে ভাগচাষী বা বর্গাদার এবং তৃতীয়জন হলেন ক্ষেতমজুর

এখন যাবতীয় সরকারী সাহায্য তা সে এককালীন আর্থিক সাহায্যই হোক অথবা কৃষিঋণ বা শস্যবিমার সুযোগ যত সহজে একজন কৃষক পান তত সহজে একজন ভাগচাষী বা বর্গাদার পান না। আর ক্ষেতমজুররা মোটামুটি সমস্ত সরকারী সুযোগ-সুবিধার বাইরে পড়ে থাকেন। তাদের সম্বল দৈনিক মজুরিটুকু।

সরকারী সু্যোগ সুবিধা পেতে গেলে চাষের জমির বৈধ পরচা, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং নিজের নামে আপডেট করা ব্যাঙ্কের পাশবই এই চারটি জিনিষ দরকার পড়ে। এখন গ্রামের চাষবাস করে খাওয়া মানুষগুলো সবাই লেখাপড়া জানা নন। অনেকেরই এইসব নথি থাকে না। বিশেষত নিজের নামে জমির পরচা বা কাগজ অনেক ভাগচাষীর থাকে না। এমনকি অনেক জমির মালিকের ক্ষেত্রেও সমস্যা থাকে। কারণ এনারা প্রায় সবাই বংশ পরম্পরায় উত্তরাধিকারসূত্রে চাষাবাদ করেন। পরচায় অনেকেরই বাপ-দাদাদের নাম থাকে। ফলে সরকারী সাহায্য পেতে জটিলতা তৈরি হয়। এই মুহুর্তে বাংলায় প্রায় ১ কোটির বেশি ক্ষেতমজুর রয়েছেন যারা এইসব সরকারী সুযোগ সুবিধার প্রায় ছিটেফোঁটা পান না। আর এর সাথে ভাগচাষী যোগ করলে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াবে দেড় কোটির গোড়ায়। এর ওপর রয়েছে ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষক যাদের নিজস্ব জমির পরিমাণ ৫ একর বা তার কম। এরা খাতায় কলমে কৃষক হলেও সারের কালোবাজারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ফসলের অভাবী বিক্রির কারণে সরকারী সুযোগ সুবিধা পেলেও তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় আর্থিক মাপকাঠিতে রয়েছেন একদম নীচের সারিতে।

আর এঁদের সিংহভাগ এই মুহুর্তে ঋণের জন্য ঝুঁকে পড়ছেন এই মাইক্রোফিনান্স সংস্থাগুলির দিকে অথবা হাত পাতছেন স্থানীয় মহাজনের দরজায়। কারণ তাদের সেই অর্থে কোন স্থায়ী উপার্জন নেই এবং এনাদের জামিনদার বা কোল্যাটেরাল সিকিউরিটি দেওয়ার সামর্থ থাকে না। সেইসঙ্গে রয়েছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির ফলে ঋণ ফেরত দিতে পারা না পারার অনিশ্চয়তা। তাই কৃষকদের ঋণ দিতে প্রথাগত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার মধ্যে একটা অনীহা কাজ করে।

যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়ার প্রায়োরিটি সেক্টর ঋণপ্রদানের গাইডলাইন অনুসারে ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের মোট প্রদত্ত ঋণের ১৮ % কৃষিক্ষেত্রে দিতে হয় যার মধ্যে আবার ১০% নির্দিষ্ট থাকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের জন্য। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের মধ্যে একটি ফাঁক রয়ে গেছে। কৃষিক্ষেত্রের মধ্যে কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণ বা মজুত করা এবং তার বিপণন , বীজ উৎপাদন, কৃষি-জীববিজ্ঞান ইত্যাদির মত কর্পোরেট চালিত ক্ষেত্র গুলি ঢুকে পড়ায় ব্যাঙ্কগুলি কৃষকদের না দিয়ে এই সমস্ত কর্পোরেট গুলিকে ঋণ দিয়ে প্রায়োরিটি সেক্টর ঋণপ্রদানের লক্ষমাত্রা পূরণ করবার চেষ্টা করে। বেসরকারি ব্যাঙ্ক গুলির মধ্যে এই প্রবণতা সব থেকে বেশি। আর তারপর যেটুকু যা লক্ষমাত্রা পূরণে ঘাটতি রয়ে যায় তার জন্য বাজার থেকে নাম মাত্র “ফি” দিয়ে বিভিন্ন গ্রামীণ কৃষিব্যাঙ্ক এবং কৃষি ঋণ প্রদানে পারদর্শী সরকারী ব্যাঙ্কের থেকে তারা কিনে নেয় প্রায়োরিটি সেক্টর লেন্ডিং শংসাপত্র । ফলে কৃষিক্ষেত্রে প্রথাগত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রকৃত ঋণপ্রদাণের ব্যপ্তি ও প্রসার না হলেও লক্ষমাত্রা পূরণ হয়ে যায়। আর তাই যাদের কৃষিঋণ বা ক্ষুদ্রঋণ দরকার তাদের কাছে প্রথাগত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সেভাবে পৌছচ্ছে না। আর বিকল্প হিসেবে যা ছিল সেই সমবায় ব্যবস্থা এবং কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কিং সিস্টেম বর্তমান শাসকের দাপাদাপিতে বেশিরভাগ জায়গাতেই ঝাঁপ ফেলে দিয়েছে বা টিমটিম করে জ্বলছে। এমনকি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রায়োরিটি সেক্টর ঋণপ্রদানের গাইডলাইন পড়লে আপনারা নিজেরাও বুঝতে পারবেন ব্যাঙ্কগুলি ক্ষুদ্রঋণ নিজে না দিয়ে যদি বিভিন্ন মাইক্রোফিনান্স সংস্থাকে ধার দেয় সরাসরি গ্রাহকদের ঋণ প্রদানের জন্য সেটাও প্রায়োরিটি সেক্টর লেন্ডিং -এর আওতায় পড়ছে। আর এসবের কারণেই যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে মাইক্রোফিনান্স সংস্থাগুলির দাপট। সঙ্গে রয়েছে অঞ্চলভিত্তিক মহাজনী ব্যবস্থা।

এসব ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সুদ অত্যন্ত চড়া হয়। সুদের হার প্রায় ২০%-৩০% এর মধ্যে থাকে। আর সময় মত ফেরত দিতে না পারলে শুরু হয়ে যায় ঋণ আদায়কারীদের দাপাদাপি। সম্প্রতি বন্যার ফলে এবং শীতকালীন বৃষ্টিতে বাংলার চাষীরা বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সঙ্গে চলছে মহামারীর প্রকোপ। এদের মধ্যে যারা মহাজনের কাছে চাষের কিম্বা বসতবাড়ির জমি-জমা বন্ধক দিয়েছেন তাদেরকে চাষের জমি থেকে অথবা বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ হতে হচ্ছে। আর যারা বন্ধক দেননি তাদের অনেকেই হাতের কৃষিজমি বেচে ঋণ মেটাচ্ছেন। এটা শুধু এবছর নয়, এমন অব্যবস্থা চলছে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এবং বহু ভাগচাষী কৃষিজমি হারিয়ে আজ সামান্য ক্ষেতমজুরে পরিণত হচ্ছেন। পেশাগতভাবে সরে যাচ্ছেন অ-কৃষিক্ষেত্রে। এমনকি ঋণ মেটাতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। গত এক দশকে গ্রামবাংলায় ক্রমবর্ধমান ক্ষেত মজুরের সংখ্যা এবং কমতে থাকা কৃষকের সংখ্যা এমনই এক কৃষি সংকটের ছবি তুলে ধরছে।

কিন্তু মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যমগুলিতে গত একদশকে গজিয়ে ওঠা এমন সংকটের খবরা-খবর চোখেই পড়ছে না! তাই আমরা রাইজ অফ ভয়েসেস, সেই অর্থে অজ্ঞাতকুলশীল এক সোশ্যালমিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তার সীমিত ক্ষমতা ও পেশাদারি দক্ষতার সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেও বাংলার খুঁটিনাটিতে আপনাদের সামনে সেই “খবর না হওয়া খবর” গুলি নিয়ে কাটাছেঁড়া করছি।

আমাদের আশা আপনারা খবরটি পড়ে আপনাদের গঠনমূলক সমালোচনায় আমাদের ঋদ্ধ করুন। আপনাদের পরিচিতদের মধ্যে লেখাটি ছড়িয়ে দিয়ে ওনাদের কাছে আমাদের পৌছতে সাহায্য করুন।

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস

তথ্যসূত্র
a) https://www.anandabazar.com/business/rbi-brings-start-ups-under-priority-sector-lending-chart-1.1198614
b) https://www.business-standard.com/article/finance/agricultural-loans-worth-rs-590-bn-went-to-615-accounts-in-2016-rti-report-118090600281_1.html
c) https://www.business-standard.com/article/finance/banks-fail-to-meet-priority-sector-lending-targets-overall-rbi-data-119010300054_1.html
d) https://www.rbi.org.in/Scripts/NotificationUser.aspx?Id=11959&Mode=0
e) https://www.thehindubusinessline.com/opinion/columns/slate/all-you-wanted-to-know-about/article32489976.ece
f) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2022-01-01/202112312130021.jpg&category=0&date=2022-01-01&button=
g) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2022-01-02/202201012215195.jpg&category=0&date=2022-01-02&button=