নতুন জেলা এবং রাজনীতি / Brand New Districts

“এসব চিপ কথা এখানে বলবেন না! কোথায় কি বলতে হয় জানুন! এরপর তো বলবেন ঘরের মধ্যে জেলা চাই, এত অফিসার কই? আপনাদের তো পুলিশ জেলা করে দেওয়া হয়েছে। ওইটুকু জায়গা, তার আবার জেলা”

মাস দশেক আগে মাননীয়া ঠিক এই কথাগুলোই প্রশাসনিক সভায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন দশ বারের বিধায়ক, আব্দুল করিম চৌধুরীকে।

আব্দুল করিম চৌধুরী, বিধায়ক, ইসলামপুর

তাহলে দশ মাসে এমন কি হল, যাতে দক্ষিণবঙ্গে ৭ টা নতুন জেলার প্রয়োজনীয়তা দেখা গেল। এত অফিসারের জোগাড় কি তবে হয়ে গেল! তার ওপর প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে শোনা যায় রাজ্যের হাতে নাকি টাকা নেই, রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরও তাতে শীলমোহর আছে। সরকারী কর্মচারীদের ডিএ বকেয়া।তারপরেও কিভাবে এই সিদ্ধান্ত! বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খান, মাঝে একবার জন বার্লাকে দেখে ঝোকের বশে, দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটা অঞ্চল নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করলেও, বর্তমানে তা চেপে গিয়েছেন। তারপরে নতুন জেলার দাবি রাজ্যের কেউ করেছেন বলে শোনা যায়নি। তাহলে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন!

পার্থকান্ডে এই মুহূর্তে শাসক দল অত্যন্ত ব্যাকফুটে। রাজ্যজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চরমে। পপুলারিটিতে আজ মাননীয়াকে ছাপিয়ে গেছেন পার্থ, যেটা সর্বকালীন রেকর্ড। পার্থকে উগরে পরিপাটি করে মুখ মুছে ফেললেও, নতুন নতুন কান্ড উঠে আসছে। তার ওপর বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর পাশে বসে সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে নেলসন ম্যান্ডেলার তুলনা করে বসেছেন, সাংবাদিক হাসলে রেগে যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী। ঘরে-বাইরে সব জায়গায় চূড়ান্ত বিপাকে রাজ্যের শাসক দল, তাই মানুষের ভুলে যাওয়ার অভ্যাসের সাথে “পজিটিভ” মিডিয়াকে এবং প্রধান বিরোধী দলের নালিশী রাজনীতির উপর বাজি রেখেই হয়ত তারা নিয়েছেন এমন সিদ্ধান্ত, নতুন জেলা চাই। সম্ভবত ভাবা হয়েছিল, নতুন ইস্যু পেলে বিরোধীরা ঝাঁপিয়ে পড়বে এই দিকে। কিন্তু হল কই? বরং আরো বেড়ে গেল ক্ষোভ-বিক্ষোভ।

নতুন ৭ জেলা ঘোষণার ঠিক পর পরই, দিপ্সীতা ধর ফেসবুকে লিখলেন,”জেলা ২৩টা থাকলেও পিসি আর ভাইপো চোর। জেলা ৩০টা হলেও পিসি আর ভাইপো চোর। আসল কথা-চোর ধরো, জেল ভরো”

অর্থাৎ পার্থবাবুকে তৃণমূল কংগ্রেস ঝেড়ে ফেললেও, বিরোধীরা তৃণমূল কংগ্রেসকে এত সহজে ছাড়বে না।

পার্থবাবুও ছাড়বেন কিনা জানা নেই।

ধন্যবাদান্তে,
রাইজ অফ ভয়েসেস