সকল দেশের সেরা / The Queen Is Dead

রাণী মৃত। ভারতের সম্পদ ২০০ বছর ধরে লুটেপুটে খেয়েছে যে ব্রিটিশ, তাদের রাণীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক। যে ব্রিটিশদের বাড়ি, দপ্তর বা প্রমোদ উদ্যানের দরজায় লেখা থাকতো “No Dogs or Indians”, তাদের রাণীর মৃত্যুতে জাতীয় শোক!

যাদের বংশ দেশকে শতকের পর শতক ধরে লুঠলো, জালিয়ানওয়ালাবাগে শত শত নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে হত্যা করল, তাদের রাণীর মৃত্যুতে ভারত সরকার “আজাদী কি অমৃত মহোৎসব”-এর প্যাডে জাতীয় শোক পালনের নিদান দিল।

কলোনিয়াল হ্যংওভার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও যে এক বিন্দুও কমেনি, সেটা নির্লজ্জভাবে আজ প্রকাশ করে ফেললো দেশের সরকার!

গতকাল রাজপথের নাম বদলে কর্তব্যপথ করে যারা ঔপনিবেশিকতার বেড়াজাল ভেঙ্গে দেশকে বেরিয়ে আসবার পরামর্শ দিলেন, আজ কিনা তাদের পেটেই ঔপনিবেশিকতার চোঁয়া ঢেঁকুর! যে দেশের রাজার “রাজপথ” বদলে “কর্তব্যপথ” হল, সেই একই দেশের রাণীর মৃত্যুতে কিনা জাতীয় শোক! সরকারী স্তরে দুঃখপ্রকাশ করে, বার্তা পাঠিয়ে কর্তব্যটা সারা যেত না কি!

আসলে যে হাত ব্রিটিশদেরকে মুচলেকা লেখে সেই হাত ব্রিটিশ রাণীমার শোকে জাতীয় পতাকা অর্ধেক নামিয়ে ফেলবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। একমাসও হয়নি, “হর ঘর তেরঙ্গা” তোলার আবেদন করা বিজেপি ও তার আদর্শগত ‘গডফাদার’ আরএসএস যে ভারতের পতাকার মর্যাদা সম্পর্কে আদৌ সচেতন নয় সেটা আরেকবার প্রমাণিত। কাজেই এরপর এদের কেউ আপনাকে দেশভক্তির পাঠ দিতে এলে সোজা মুখের ওপর বলে দেবেন, “রাণী সাহেবা”র চ্যালা চামুণ্ডার বাতেলাবাজি শুনবো বলে আমরা এই দেশে জন্মাইনি!

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রভুর মৃত্যুতে দেশের পতাকা রাষ্ট্রীয় শোকে অর্ধনমিত থাকা সারা দেশের ১৪০ কোটি ভারতবাসীর সেরা লজ্জা।

ধন্যবাদান্তে,
রাইজ অফ ভয়েসেস