‘ক্যাপ্টেন’? তিনিও পদাতিক / #DekecheCaptain

সময় ‘ক্যাপ্টেন’ জন্ম দেয়। অনুঘটক হতে পারেন, ‘ক্যাপ্টেন’ সময়ের নিয়ন্ত্রক নন।

‘লারজার দ্যান লাইফ’ বানাবেন না। ক্যাপ্টেনের ক্ষতি। আরও বড় ক্ষতি হতে পারে সম্ভাবনার।

মনে রাখবেন। কোন বইতে সরাসরি লেখা নেই এভাবে। ২০০১-২০১১ র সেই শিক্ষা রক্ত ডুবিয়ে লেখা। আর তার শরীর মানুষের আশা, আশঙ্কার বহিঃপ্রকাশ।

গত এগারো বছর তৃণমূলের নিদারুণ অত্যাচার এক বিশেষ সময়ের জন্ম দিয়েছে। রাজ্যে সঙ্ঘ এবং বিজেপির ফনা মাথা তুলেছে। সময় আশঙ্কিত। তাই ছটফট করছে। শহীদদের আত্মত্যাগ বুঝিয়েছে, ঝড় আসছে।

আসানসোল

এই সময় ‘ক্যাপ্টেন’ রা আসে। বরাবর তাই হয়েছে। আবার কখনও সাফল্যের পথ ধরে গড়ে ওঠা ভিতের উপর সম্ভাবনার আলোয় নতুন ক্যাপ্টেনের জন্ম হয়।

ক্যাপ্টেন মুখ। মাথা মতাদর্শ। শরীরে তার মানুষের আশা, আশঙ্কার বহিঃপ্রকাশ। পথ? জনকল্লোলে নির্মাণ হবে।

ক্যাপ্টেনদের সুবিধা কী? সময় তাঁর কথা মানুষকে বিশ্বাস করতে শেখায়। হ্যাঁ, সময়। ক্যাপ্টেনদের অসুবিধা? বিস্তর। সামান্য ব্যর্থতা, কৌশলগত পিছুহটাতেও প্রবল চাপে পড়তে হয়। তীব্র সমালোচনা হজম করতে হয়। তার অনেকটাই হয় যুক্তিহীন। তবু শুনতে হয়। কারন ‘ক্যাপ্টেন’-এর জন্মে প্রবল আবেগের সঙ্গে যুক্তি অগ্রাহ্য করার বাসনা জড়িয়ে থাকে।তর্কহীনভাবে এই সময়ের সব বিপদের শিরোস্ত্রান হলেন এই ‘ক্যাপ্টেন’।

জলপাইগুড়ি

আমি ‘ক্যাপ্টেন’ দেখেছি। আমরা দেখেছি। আমাদের প্রজন্ম, যাঁরা বিগত শতাব্দীর শেষদিকে এই আকাশের নিচে নিঃশ্বাস নেওয়া শুরু করেছি। ক্যাপ্টেন’ ধারনায় মিডিয়া সময় বুঝে তা দেয়। কী ভাবে নিদারুণ প্রত্যাশা গড়ে তোলা হয় পাতায় পাতায়, ভিডিওর কারুকলায়।

তাও এক কৌশল। টিআরপি আর সার্কুলেশনের অঙ্ক সেখানে জড়িয়ে থাকে।

‘যুবরাজ’ বলে যাঁকে ব্যঙ্গ করা হত চারের পাতার পোষ্ট এডিটে, সেই তাঁকে করে দেওয়া হয় ‘ব্র্যান্ড’। আমরা দেখেছি। আপনারা, যাঁরা আমাদের ভরসা, ভালোবাসা, তাঁরা জানুন।

যখন সময়ের কারনে, মানুষের চেতনাকে সঠিকভাবে বুঝতে না পারার ফলে এবং শত্রু পক্ষের সব চাল ধরতে না পারবার কারনে সাময়িক বিপর্যয় আসে, সবার আগে ‘ক্যাপ্টেন’কে দোষারোপ শুরু হয়। ক্যাপ্টেনদের কাঁধে সবটুকু যন্ত্রণা ঢেলে কেউ কেউ স্বস্তি খুঁজি থিওরিতে।

লোহাপুর, বীরভূম

আপনাদের ‘ক্যাপ্টেন’ প্রচারে পুরোপুরি উদ্বেলিত হয়েও বলছি, ‘ক্যাপ্টেন’কে রক্ষার দায়িত্ব সবার। সবাই নিজেদের মধ্যে ভাগ করুন সেই গুরুদায়িত্ব।

সময় আপনাদের হবে।

সামান্য রাগ হলেও দুঃখিত নই। কারন আমরা, আমাদের প্রজন্ম বিশ্বাস করি একটি সাক্ষাৎকারের অল্প অংশে।

বলি?

প্রশ্ন ছিল, ইতিহাস আপনাকে কেন মনে রাখবে?

আর এক ক্যাপ্টেন ইন্দিরা ভবনে বসে বিখ্যাত সাংবাদিককে বলেছিলেন, “ইতিহাস আকবর দ্য গ্রেটকে মনে রাখেনি। আমি তো তুচ্ছ।”

ইতিহাস? মহাকাল।

তার রথের ঘোড়া? শুধু মানুষ। জনতা।

পাঁচলা, হাওড়া

আপনি, আমি সবাই পদাতিক।

ক্যাপ্টেনও।