‘বাম’ রোগ / The Ailment
২০২৪ এর লোকসভা ভোট হয়ে গেল। আমাদের রাজ্যে গণনার শুরু থেকে সংশয়াতীত প্রাধান্য নিয়ে দুই তৃতীয়াংশ আসনে জিতলো তৃণমূল। অনেক পেছনে থেকে দ্বিতীয় বিজেপি। আর বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীদের রাজ্যের মোট ৪২ টি আসনের মধ্যে ৩টি আসন ছাড়া কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। তারমধ্যে আবার মালদার একটি আসন জোটের পক্ষে কংগ্রেসের টিকিটে ‘গণিখান’ পরিবারের সদস্য ঈশা খান জেতায় সেটা কতটা জোটের রাজনৈতিক ভাষ্যের সাফল্য, আর কতটা অতীতের ‘গণিখান’ গড়ের অবশিষ্ট ক্যারিশ্মা তা নিয়ে আমাদের রাইজ অফ ভয়েসেসের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আর বাকি দুটি আসনে কিছুটা সম্মানজনক ভোট পেয়ে বাম-কংগ্রেস জোট দ্বিতীয় হলেও আমাদের মনে রাখতে হবে তার একটিতে প্রার্থী ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং অন্যটিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। আর এবারের ভোটের ফলাফলের যা ট্রেন্ড তা থেকে আমরা হলফ করে বলতে পারি এই দুজন হেভিওয়েটের পরিবর্তে এই দুই দলের তরফে অন্য যে কেউ এই দুই আসনে প্রার্থী হলে বাম কংগ্রেস জোট এই দুই আসনে দ্বিতীয় তো হতেই পারতেন না, বরং অনেক দূরবর্তী তৃতীয় হতেন। মানে মোদ্দা কথা হলো তিনটি কেন্দ্রে ব্যক্তি বিশেষের কারণে কিছুটা ছাপ ফেলতে পারলেও এবার লোকসভা ভোটে সারা রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোটের রাজনৈতিক ভাষ্য একদম ফুৎকারে উড়ে গেছে। সত্যি বলতে কি বাম কংগ্রেস জোটকে ভোটবাক্সে রীতিমত দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়েছে।
এখন তৃনমূলের প্রশ্নাতীত সাফল্যের কৃতিত্ব কার, নেত্রীর নাকি সেনাপতির নাকি লক্ষীর ভান্ডারের তাই নিয়ে বিতর্ক চলছে। অন্যদিকে ‘মোদি-মিডিয়া-মানি’ সাথে থাকা সত্বেও বিজেপির এভাবে রাজ্য জুড়ে পর্যুদস্ত হওয়ার পেছনে কে বেশি দায়ী, শুভেন্দু, সুকান্ত নাকি দিলীপ ঘোষ, তা নিয়েও সংবাদমাধ্যমে চলছে বিজেপির অভ্যন্তরীন আকচা আকচির খবরাখবর। আর এসবের মাঝে বাম-কংগ্রেস জোটকে নিয়ে খুব একটা বিশেষ আলোচনা হচ্ছে না। তারমধ্যেও যেটুকু যা হচ্ছে, তা তাদের ঐ প্রাপ্ত ১০-১১% ভোটের তুলনায় অনেক বেশি বলেই আমাদের মনে হচ্ছে। তাও তাদের নিয়ে একটা প্রতিবেদন রাইজ অফ ভয়েসেস লিখছে। আর তাই এখানে আরেকটু আমাদের স্পষ্ট হওয়া দরকার।
প্রদেশ কংগ্রেস তাদের হাইকম্যান্ডের মর্জি মাফিক পুকুরে ডুব দেবে, নাকি নদীতে সাঁতার কাটবে, নাকি সাগরে হাবুডুবু খাবে সেটা বিধানভবনের পক্ষে আগ বাড়িয়ে জানা, বোঝা বা বলা, কোনটাই সম্ভব নয়। এমনকি কেন এমন হার তা বলবার মত কোমরের জোরও এই মুহুর্তে তাদের নেই। অন্যদিকে হাইকম্যান্ডও এই মুহুর্তে সারা দেশে ১০০-র কাছাকাছি আসন পেয়ে আনন্দে মশগুল! কেন স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৬০ বছর দেশ শাসন করা একটি দল ২০০ আসন পেল না, তা নিয়ে সর্বভারতীয় নেতাদের মধ্যে তেমন কোন হেলদোল চোখে পড়ছে না। কাজেই সেখানে আমরা রাইজ অফ ভয়েসেস আগ বাড়িয়ে তাদের নিয়ে কিছু বলতে চাই না।
কিন্তু টানা চৌত্রিশ বছর রাজ্যপাট সামলানো বামেদের বিগত পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে কিছুটা আশা জাগিয়েও, ক্যাপ্টেন মীনাক্ষীদের ইনসাফ যাত্রার প্রশ্নাতীত সাফল্য ও বিশাল ঐতিহাসিক ব্রিগেড সভার পরেও লোকসভা নির্বাচনে এমন ‘হতশ্রী’ ফলাফল কেন, তা নিয়ে আমাদের মনে হয়েছে একটা পর্যালোচনা জরুরি। কারণ স্বয়ং ‘সদ্য পরাজিত’ সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক এব্যাপারে খোলা মনে মানুষের মতামত শুনতে চেয়েছেন। আর তাই এই প্রতিবেদনের উপস্থাপনা। এর আগে ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে শুন্য হওয়ার পরও বঙ্গ সিপিআই(এম) এমনই একটি চুলচেরা আত্মসমীক্ষার আসর বসিয়েছিল। তখনও রাইজ অফ ভয়েসেসের তরফে তৎকালীন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকেও এরকমই একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। আর সেই ধারা মেনেই ফের একবার এই প্রতিবেদনের সূত্রপাত। যদিও এবার সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিমকে কোন চিঠি দেওয়া হচ্ছে না।
তবে সূর্য্য মিশ্রকে দেওয়া চিঠিতে বছর তিনেক আগে যে কথা বলা হয়েছিল এবারের প্রতিবেদনটিতে কিছুটা সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি। কাজেই সেই চর্বিত চর্বণ এড়াতে এবার প্রতিবেদনের শুরুতেই বলে দিচ্ছি, সূর্য মিশ্রকে দেওয়া চিঠিটা একবার পড়ে নিয়ে এই প্রতিবেদনটা পড়তে। তাতে আপনাদের বুঝতে সুবিধে হবে।
আর আমরা শুরুতেই ঢুকে পড়ছি, আমাদের প্রত্যেকের একটি অতি পরিচিত শোনা গল্পে যা প্রতিবার বাংলা পরীক্ষার আগের রাতে মানসিক চাপ কমাতে বাড়ির বড়ো’রা বাড়ির পরিক্ষার্থী ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের শোনাতেন। সেটা ছিল একটি ফাঁকিবাজ ছেলের গল্প। বাংলা পরীক্ষা। সে আগের দিন দুলে দুলে গরুর রচনা পড়ে মুখস্থ করে এসেছে। আর কোনও রচনা সে পড়ে আসেনি। এদিকে পরীক্ষার হলে প্রশ্ন খুলে দেখে রচনা লিখতে হবে বর্ষাকাল নিয়ে। বাকিটা যদিও সবার জানা, তবু ফের একবার লিখতে হচ্ছে কারণ সেটা না লিখলে এমন একটা মজার গল্পের সাথে বাম বিপর্যয়ের গুরুগম্ভীর পর্যালোচনার ‘মিল’টা অনেকেই মিস করে যাবেন। ছেলেটি রচনা লেখা শুরু করে ….আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। বর্ষাকালে খুব বৃষ্টি হয়। ফলে রাস্তাঘাটে জল জমে, গাঁ-গঞ্জে বন্যা হয়। বন্যায় ঘর বাড়ি ডুবে যায়। এদিকে গরু গৃহপালিত প্রাণী। বাড়ির পাশে গোয়াল ঘরে থাকে। তাই বন্যায় গরুও ডুবে যায়, ফলে গরুদের খুব কষ্ট হয়। গরু খুব উপকারী জীব। গরু দুধ দেয়, সময় সময় হাম্বা হাম্বা ডাকে। গরুর চারটে পা, দুটো চোখ, দুটো কান আর একটা লেজ….ইত্যাদি ইত্যাদি। এভাবে বাকি পাতা জুড়ে ফাঁকিবাজ ছেলেটি গরুর রচনা লিখে পাতা ভরিয়ে আসে। হয়তো বা ছেলেটির বুদ্ধিমত্তার জন্য পরীক্ষক মুচকি হেসে কিছু নম্বরও দিয়ে ফেলেন। তবে সেটা নিতান্তই সান্ত্বনা পুরস্কারের মত। তাতে পাশ করা যায় না।
কিন্তু বামপন্থী ছেলেমেয়েরা যে ফাঁকিবাজ তা কেউ বলতে পারবে না। কেউ যাদবপুর, কেউ প্রেসিডেন্সি, কেউ বা জেএনইউ! একটু ঠিক করে খুঁজলে খান কয়েক আইএসআই, আইআইটি বা এমআইটি’ও বেরিয়ে পড়বে। এখন হয়েছে কি এই সমস্ত উজ্জ্বল একঝাঁক শিক্ষিত তরুণ-তরুণীও ভোট পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্বে দুলে দুলে ‘রুটি-রুজি’, ‘হাতে কাজ-পাতে ভাত’ বা ‘খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান/শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কর্ম সংস্থান’ পড়েছে। ভেবেছে তৃতীয় বিশ্বের দেশ ভারতবর্ষে এগুলোই জ্বলন্ত সমস্যা, কাজেই মানুষ এসবের থেকে মুক্তি চাইবে এটাই স্বাভাবিক। কাজেই তারা ভাবে ‘রুটি-রুজি’, ‘পাত-ভাত’ করে ভোট পরীক্ষায় ফাটিয়ে দেবে। কিন্তু পরীক্ষার দিন প্রশ্নপত্র খুলে দেখে প্রশ্ন এসেছে বাংলাভাগ নিয়ে, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে, লক্ষীর ভাণ্ডার নিয়ে! মমতাজ বেগম, সন্দেশখালির মা-বোনদের চরিত্রহনন সংক্রান্ত বাকযুদ্ধ ও পরবর্তী ফাঁস হওয়া ভিডিওকান্ড, রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখল, কার্তিক মহারাজ, শক্তি স্বরুপা, রাজমাতা ইত্যাদিদের নিয়ে একের পর এক প্রশ্নে ভর্তি প্রশ্নপত্র! এগুলোই জনতার রাজনৈতিক আলোচনার টপিক। এদিকে রুটি-রুজি, পাত-ভাত পড়ে আসা মেধাবী উচ্চ শিক্ষিত বাম প্রার্থী পরীক্ষার মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, এসবই হলো আসল সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে মিডিয়ার সাহায্যে তৃনমূল-বিজেপি বাইনারি স্থাপনের চেষ্টা। আসল ইস্যু হলো রুটি-রুজির সমস্যা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অপ্রতুল পরিকাঠামোর সমস্যা, বেকারত্বের সমস্যা ইত্যাদি ইত্যাদি।
মানে মেধাবী বামেরাও ফাঁকিবাজ ছাত্রটির মত নিজের মনের মত প্রশ্নপত্র চায় যা বাস্তবে অমিল। ফলে পরীক্ষার খাতা ভরলেও রেজাল্টের পাতা ভরছে না। কিছু মানুষ তাদের বুদ্ধিমত্তার জন্য সান্ত্বনা পুরস্কারের মত ভোট দিচ্ছেন, যার সমষ্টি ঐ প্রাপ্ত ১০% ভোট। আর যেহেতু তারা বাংলাভাগ, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা বা রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখল বা সন্দেশখালি কান্ড ও পরবর্তী ফাঁস হওয়া ভিডিওক্লিপগুলোকে আসল ইস্যু বলে মনে করেন না, যা আদতে পাবলিক ডিস্কোর্সে ঢুকিয়ে দিয়েছে বঙ্গ সংবাদমাধ্যম এবং যেগুলো আমাদের রাইজ অফ ভয়েসেসের মতে সত্যি সত্যি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, সেহেতু মানুষও আর তাই বামেদের সাথে নিজেদেরকে কানেক্ট করতে পারে না। তাই বামেদেরকে ভোট বাক্সে প্রাসঙ্গিক থাকতে গেলে সবার আগে মনে রাখা প্রয়োজন রুটি-রুজির বাইরেও একটা জীবন আছে। সব কিছুকে গলার জোরে গরুর রচনা লেখার মত রুটি-রুজিতে টেনে আনা বন্ধ করতে হবে, যা দিল্লির একেজি ভবন থেকে শুরু করে কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রীট হয়ে পাড়ার কমরেড পল্টুদার ডাইনিং টেবিল, সর্বত্র মহামারির মত ছড়িয়ে পড়েছে। পাবলিকের ভোট আদায় করতে গেলে পাবলিক পলিটিক্যাল ডিস্কোর্সে প্রাসঙ্গিক থাকতে হবে। এই মুহুর্তে এটাই আসল কাজ।
আর হ্যাঁ, মাথায় রাখতে হবে বুক পকেটে ১০% ভোট নিয়ে বিকল্প ভাষ্য তৈরি করা যায় না। ‘মানুষকে বোঝাতে হবে’ মানসিকতা দূরে সরিয়ে আপাতত মানুষকে বোঝবার চেষ্টা করতে হবে। বামেদেরকে আগে মানুষের ভাষ্যকে মর্যাদা দিয়ে তার সাথে তাল মিলিয়ে রাজনীতি করা প্র্যাক্টিস করতে হবে। একটা সম্মানজনক ভোট শতাংশ (২৫%+) পেতে হবে। তারপরেই একমাত্র বিকল্প ভাষ্য তৈরির পরিসর পাবেন, তার আগে নয়। কাজেই ডোন্ট জাম্প দ্য গান। মনে রাখবেন বিজেপির সাংগঠনিক দক্ষতা কিন্তু বামেদের তুলনায় এমন কিছু আহামরি নয়। তা সত্বেও তারা ৩৮% এর বেশি ভোট পায় কি করে! শ্রীরামপুর, যাদবপুর বা দমদমের মত কেন্দ্রে কমজোরি বিজেপি প্রার্থীরা এত্ত ভোট পায় কি করে! হেভিওয়েট বাম প্রার্থীদের পেছনে ফেলে দেয় কি করে! সন্দেশখালির রেখা পাত্র বা কৃষ্ণনগরের রাজমাতাদের ২০২৪ এর ভোটের আগে কেউ চিনতো কি? সেখানে তাদের বিরুদ্ধে লড়া সিপিআই(এম) প্রার্থী নিরাপদ সর্দার বা এস এম সাদি তো ঐ সমস্ত জেলার রাজনৈতিক বৃত্তে যথেষ্ট পরিচিত মুখ! তাও তারা শুধু থার্ড বা ফোর্থ হয়েছেন তাই নয়, তাদের জামানতও জব্দ হয়েছে আর রেখা পাত্র ও রাজমাতার মত নব্য রাজনীতিতে আসা বিজেপি প্রার্থীরা লাখ লাখ ভোট পেয়েছেন। এসব প্রাপ্ত ভোট কি তাদের সাংগঠনিক জোরের ফসল? কখনই না। এসবই তারা পেয়েছেন জনমানসে সদর্থক তৃণমূল বিরোধী ন্যারেটিভ নির্মাণ করে।
কাজেই বারবার একই ভুল করে বারবার আত্মসমালোচনা ও পর্যালোচনা করে লাভ নেই। বামেদেরকে মনে রাখতে হবে এটা সেই প্রমোদ দাশগুপ্তের জমানা নেই যখন বাজারি মিডিয়াকে গাল পেরে রাজনীতিতে টিকে থাকা যাবে। প্রমোদ দাশগুপ্তের সময় ঘরে ঘরে টিভি, হাতে হাতে মোবাইল ছিল না। দিনরাত খবর দেওয়ার জন্য গণ্ডায় গণ্ডায় খবরের চ্যানেল ছিল না। পাড়ায় ছিল বলতে দু-চারখান রেডিও। তাতে দিনে তিনবার খবর শোনা যেত। আর ছিল হাতে গোনা কিছু খবরের কাগজ। তাও সেসব কাগজ সব বাড়িতে আসত না। আর সাক্ষরতার হারও ছিল মাত্র চল্লিশ শতাংশ। কাজেই কাগজ পড়ে বোঝবার মত লোকও ছিল হাতে গোনা। আর তাই জনমানসে মিডিয়ার প্রভাব ছিল খুবই সীমিত। তাই তখন এলাকায় এলাকায় বুথে বুথে ঘুরে ঘুরে সংগঠন করে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতো।
কিন্তু এটা হলো একবিংশ শতাব্দী। এখানে মিডিয়া (মেইন স্ট্রিম বা সোশ্যাল, দুইই) সর্বগ্রাসী। এখন গণ্ডায় গণ্ডায় খবরের চ্যানেল আর খবরের কাগজ। বেশিরভাগই শাসক মদতপুষ্ট। সাথে ফেসবুক, ইউটিউবের প্রভাবশালীরা, যারা প্রত্যেকেই প্রায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ধামাধরা। মোবাইল বা মুঠো ফোনের দৌলতে সেসবই আজ সবার হাতের মুঠোয়। এমন ব্যবস্থায় মিডিয়াই পলিটিক্যাল ডিস্কোর্স তৈরি করবে। ওটাই ভোট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। ভোটে জিততে হলে সেই সব প্রশ্নের উত্তরই জানা থাকতে হবে। এই মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করেই বাম বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এলাকায় এলাকায় বুথে বুথে স্বশরীরে হাজির না থেকেও নিজেদের স্বপক্ষে রাজনৈতিক জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছে, যেটাকে আমরা বলছি ন্যারেটিভ। বামেদেরকেও এই কৌশল রপ্ত করতে হবে। তারজন্যে দরকারে পেশাদার সংস্থার সাহায্য নিতে হবে।
স্পষ্ট দেওয়ালের লিখন পড়ে নিন। বাজারে বামেদের স্বপক্ষে ন্যারেটিভ না থাকলে ভোট জুটবে না। সে আপনারা যতই মিটিং-মিছিল-ব্রিগেড করুন।
আর হ্যাঁ, জেলায় জেলায় এলাকায় এলাকায় কে বা কারা সাবাতোজ করেছে সেসব খুঁজে অযথা সময় নষ্ট করে লাভ নেই। যে দলের রাজ্য সম্পাদক প্রাণপাত পরিশ্রম করেও নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দিনরাত পড়ে থেকেও হেরে যায়, দল রাজ্যে মাত্র ৮%-১০% ভোট পায়, সেই দলের এরিয়া বা জেলা কমিটির চুনোপুঁটি সম্পাদক বা সদস্যদের জনমানসে সেই প্রভাব থাকবার কথা নয়, যাতে তারা দলীয় প্রার্থীকে সাবাতোজ করে হারিয়ে দিতে পারে! রাইজ অফ ভয়েসেস এই সাবোতোজ তত্ত্ব বিশ্বাস করে না।
ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদান্তে
সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
পুনশ্চঃ জোট আর ফ্রন্ট নিয়ে এবারের ভোটে ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণায় দীর্ঘ টালবাহানা মানুষ মোটেই ভালোভাবে নেয়নি।
Snehangshu Ghosal
প্রতি বুথে দুজন সর্বক্ষণের কর্মী চাই।আর মিডিয়া এখন টাকায় বস।তাদের কিছু টাকা দিয়ে নিজেদের আন্দোলন কর্মসূচি বা এমনি এমনিই প্রচারে থাকা।ঐ ঘন্টাখানেকর আকচা আকচি নয়।খবরে থাকা।
এই প্রেসক্রিপশন টায় ফল আসবেই।।
Soham Kar
Rise of Voices এর প্রতিবেদনটি পড়ে ভালো লাগলো। এই বিশ্লেষণ সঠিক বলেই আমার নিজের মনে হয়।
Tanmay ghosh
খুব ভালো ভাবেই সঠিক কথা তুলে ধরেছেন। একটা অদ্ভুত মানসিক এসেছে, যত দ্বোষ এরিয়া কমিটি, শাখা কমিটি এদের। এরা নাকি মানুষের বাড়ি যায় না, মনে মনে অনেকে বিজেপি, তৃণমূল করে।
নিজেরে সেই ইস্যু তৈরি করতে পারে না যা মানুষ কে ভাবাবে, আর সব দায় নিচুস্তরের কর্মীদের উপর দেবে। আমার এক বন্ধু রীতিমতো লুকিয়ে কাজে যায় আর বাড়ি ফেরে, তাও তৃণমূল বিজেপির কথা ভাবে না৷ আর নেতৃত্বের কেউ কেউ এদের উপর দোষ চাপায় এরা নাকি মানুষের বাড়ি যায় না।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বারাসাত বিদ্যাসাগর ভবনে, যেটা পৌরসভার হল, নাম ঠিক বললো কীনা জানি না, যাইহোক যুবদের সভা ছিল। যথারীতি সভা শুনতে শুনতে গরমে আর একঘেয়ে কথা শুনে অনেকে বাইরে বেরিয়ে গেছিল। তখন মঞ্চ থেকে বলচ্ছে সুন্দর বনে আমাদের কমরেড খুন হচ্ছে আর আপনারা গরম সহ্য করতে পারচ্ছেন না।
এখন এই নেতাদের কে বোঝাবে যে সুন্দর বনে খুন হওয়া ওই কমরেড এদের মধ্যেই একজন যারা আপনাদের কথা এই গরম উপক্ষে করে শুনতে পারচ্ছে। এই বাইরে বেড়িয়ে যাওয়া কমরেড বাড়িতে গিয়ে খুন হচ্ছে, কিন্তু গরম সহ্য করে আপনার কথা শুনতে চাইচ্ছে না। দ্বোষ টা কার ভাবুন।
KAUSHIK NANDI
উত্তর দিনাজপুর : এ DYFI এবং SFI ছাড়া অন্যান্য গণ সংগঠন : এর অবস্থা তথ্যইবছো, কৃষক সভা নেই, ( যদিও দুটো চার খান নেতা আছে :), CITU দূরবীন দিয়ে দেখতে হয়, মহিলা সমিতি : নেই, জিলা শহর রায়গঞ্জ : এ CPIM পার্টিটা আছে কিনা, জানাজায় না। ABTA / ABPTA,: কিছু আছে, WEBCUTA : নেই। এমন প্রচুর নেতা আছে, যাদের সামাজিক গ্রহণ যোগ্যতা, নিয়েই প্রশ্ন আছে। গ্রামে বসবাসকারী বেশিরভাগ নেতারাই আজ শহরে বসবাস করছে। গ্রামের সাথে যোগাযোগ নেই,:: নব্য ধোনিতে এরা আজ পরিণত,:: মানসিকতা এবং LIFESTYLE : এর দিকে। তাঁর পর আছে TMC, BJP র সাথে লুকোচুরি সম্পর্ক। RICE OF VOICE : এর প্রতিটি কথা সঠিক। এর সাথে এগুলিও যুক্ত করুন। 🙏🙏🙏
Pratap
প্রথম কর্তব্য হলো নাম ” communist ” পরিহার পূর্বক একটি বাংলা ও ভারতীয় ভাষা লিপ্ত নাম খুঁজে বের করা ।। ও USSR , CRC ইত্যাদি পরিত্যাগ করিয়া social democracy র পথ গ্রহণ করা ।
Macro-scale capitalism & micro -scale Welfare economic কে praxis হিসাবে গ্রহণ করা।
Stalin , Mao ও Lelin পরিত্যাগ করে Adam Smith , Albert Hirschmann ও Amartya Sen কে গ্রহণ করা ।। Marx should remain an overall persons , but they should liberate from lesser gods like Lelin Stalin & Mao…
Mangal Hansda
Thanks