খবরের অক্সিজেন / World Press Freedom Index

৩রা মে, ২০২২ প্রকাশিত হয়েছিল, “ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স”। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সেই সূচকে আমাদের দেশ গোটা বিশ্বের ১৮০ টি দেশের মধ্যে ১৫০তম স্থানে অবস্থান করছে। গত পরশু রাইজ ভয়েসেসের ফেসবুক পেজে একটা পোষ্ট এসেছিল, যাতে গোটা গোটা বাংলা হরফে প্রশ্ন ছিল,”আগামীকাল কয়টি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় এই খবর ছাপা হবে?”

৪ঠা মে-এর সকালেই আপনারা হয়ত চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে পেয়ে গেছেন এর উত্তর, আর ঠাওর করতে পারছেন, এই মুহূর্তে “সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা” এই দেশে ঠিক কতখানি। আর যদি সকলের পত্রিকা না পড়ে থাকেন, তাহলে আমরা সাহায্য করে দিচ্ছি।

আমাদের রাজ্যে যেকটা চালু বাংলা দৈনিক সংবাদপত্র আছে তাদের মধ্যে প্রথমসারির সবকটা কাগজ ৪ তারিখ খুঁজে পেতে আমরা দেখলাম, আনন্দবাজার, আজকাল, গণশক্তি ছাড়া কেউই খবরটা ছাপেননি। আর যারা ছেপেছেন তারা আবার খবরটিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে না ছেপে, ভেতরের পাতায় চালান করে দিয়েছেন। তার বদলে প্রথমদিকের পাতাগুলোতে পাতাজোড়া ঈদ ও অক্ষয় তৃতীয়া পালনের ছবিসহ খবরা-খবর ছাপা হয়েছে।

যারা নিজেদের স্বাধীনতা নিয়ে নিজেরাই সচেতন নন, সতর্ক নন, তাঁরা কি আদৌ গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভ হতে পারবেন! মানে যতদিন যাচ্ছে, এটা সেই অনেকটা সুকুমার রায়ের লেখা কবিতাটার মত হয়ে যাচ্ছে –

মাসি গো মাসি পাচ্ছে হাসি
নিম গাছেতে হচ্ছে শিম-
হাতির মাথায় ব্যাঙের ছাতা
কাগের বাসায় বগের ডিম।

কিন্তু আমরা রাইজ অফ ভয়েসেস চাই আমাদের এসব চিন্তাভাবনা লেখাপত্তরকে অমূলক, “আবোল তাবোল” প্রমাণ করে দিক বাংলার সাংবাদিকতা। এই মুহুর্তে সেই সুযোগও রয়েছে।

খবরে প্রকাশ আজ নাকি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে এসেছেন। এই “শাহী সফর” নাকি রাজ্য বিজেপিকে অক্সিজেন দিতে।
বাংলার সাংবাদিককূল কি ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ভারতের এমন কদর্য অবনমন নিয়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে “শাহী সওয়াল” ছুঁড়ে দিয়ে বাংলা তথা দেশের সাংবাদিকতা ও সংবাদমাধ্যমকে অক্সিজেনের খোঁজ দিতে পারবে? আমরা অপেক্ষায় রইলাম।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য বলে রাখা দরকার এনারাই কিন্তু “পজিটিভ” নিউজ করতে হবে বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হম্বিতম্বি দিব্যি হজম করে ল্যাজ গুটিয়ে নবান্ন থেকে চলে এসেছেন!

কাজেই আশা কম। কিন্তু দাবীটা রইল।

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস