ইশ্বর-আল্লাহ’র নামাঙ্কিত সম্পদ / Debattor and Waqf Properties

হিন্দুদের ক্ষেত্রে দেবত্তর, ইসলামে ওয়াকফ। ওপরওয়ালার নামাঙ্কিত দুই সম্পত্তিই সঙ্কটে। টিম রাইজ অফ ভয়েসেস ময়দানে নেমেছিল এই সঙ্কটের মাত্রা জরিপ করতে, তাতে যা রিপোর্ট হাতে এসেছে, তাতে নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমাদের রাজ্যে এই মুহূর্তে যত দেবত্তর এবং ওয়াকফ সম্পত্তি আছে, তার পরিমাণ বিশ্বের অনেক দেশের জিডিপি’র চেয়ে ঢের বেশি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, এই বিপুল সম্পদের অধিকাংশই বহু যুগ ধরে দখলদারের কব্জায়। বেশ কিছু জায়গায় অধিকৃত প্রতিষ্ঠানের নাম রাষ্ট্র, এটা শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য।

নানান তথ্য প্রমাণ ঘেঁটে জানা যায়, ফোর্ট উইলিয়ামস্, রাজভবন থেকে ইডেন উদ্যান হয়ে ময়দান, এই অঞ্চলটা ওয়াকফ সম্পত্তি। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতায় উপরওয়ালার নামে অর্থাৎ দেবোত্তর ট্রাস্টের বাড়ি আমাদের হাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অন্তত আড়াই লক্ষ।

বিস্তারিত আলোচনার আগে বরং জেনে নেওয়া যাক দেবত্তর আর ওয়াকফ সম্পত্তি কি?

দেবত্তর সম্পত্তি

হিন্দু আইন অনুসারে, হিন্দু ধর্মীয় ও দাতব্য উদ্দেশ্যে নিবেদিত যেকোন সম্পত্তিকে দেবত্তর সম্পত্তি বলে। শাস্ত্রীয় আইন অনুযায়ী এই সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় না। এই সম্পত্তি দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের, তারা সেবায়েত। এক কালে সম্পন্ন ব্যক্তিদের অনেকে নিজেদের সম্পত্তি দেবতার উদ্দেশ্যে লিখে দিতেন। কিন্তু কেন করতেন? কখনও দেবতার প্রতি ভক্তি বা আবেগের বশে, কখনও বিপথগামী সন্তানকে বঞ্চিত করার অভিপ্রায়ে, কখনও নিঃসন্তান গৃহমালিক, কখনও দেনাগ্রস্থ মালিক তাঁদের সম্পত্তি দেবতার উদ্দেশে দান করতেন, কখনো সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আশঙ্কাতেও কেউ কেউ এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সাধারণত, দেবত্তর সম্পত্তি নানান ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, কিন্তু এদের কোন নিয়ামক বোর্ড নেই, যেটা ওয়াকফের ক্ষেত্রে আছে।

ওয়াকফ সম্পত্তি

ইসলামী পরিভাষায় এটি হল ইসলাম পক্ষাবলম্বী কারও স্থায়ী রূপে দান করা যে কোনও স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি, যা মুসলিম আইনানুসারে ধার্মিক, বা দাতব্য। কোনও দলিলের মাধ্যমেও যেমন কোনও ওয়াকফ তৈরি করা যেতে পারে, তেমনই দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় বা দাতব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসা কোনও সম্পত্তিও ওয়াকফ বলে গণ্য হতে পারে। সাধারণভাবে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোনও সমাধিস্থল, মসজিদ এবং এতিমখানা(অনাথালয়) চালানোয় অর্থসাহায্য করার জন্য ওয়াকফ। কোনও ব্যক্তি ওয়াকফ করার পর আর সেই সম্পত্তি ফেরত নিতে পারেন না এবং ওয়াকফ চলতেই থাকে।

ভারতে ওয়াকফ আইন ১৯৯৫ অনুসারে ওয়াকফ প্রশাসন চালিত হয়। এই আইনের আওতায় একজন সার্ভে কমিশনার ওয়াকফ হিসেবে ঘোষিত সমস্ত সম্পত্তি স্থানীয় ভাবে তদন্ত করে, সাক্ষীদের ডেকে পাঠিয়ে এবং কাগজপত্র পরীক্ষা করার পর এই সম্পত্তি তালিকাভুক্ত করেন। ওয়াকফের ম্যানেজার হিসেবে যিনি কাজ করেন তাঁকে বলা হয় মুতাওয়ালি, যিনি সুপারভাইজরের দায়িত্ব পালন করেন। এটা অনেকটা ১৯৮২ সালের ভারতীয় ট্রাস্ট আইনের মতই, তবে ট্রাস্ট ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যের চেয়ে বৃহত্তর উদ্দেশ্যেও গঠিত হতে পারে। তবে কোনও ট্রাস্ট গঠিত হওয়ার পর ভেঙে দেওয়াও যেতে পারে, যা ওয়াকফের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।

ইশ্বর হোক বা আল্লাহ, তাদের সম্পত্তি আইনগত ভাবে বিক্রি করা না গেলেও, ছলে-বলে-কৌশলে যুগে যুগে দখল হয়ে গেছে দেশের সর্বত্র।

ওয়াকফ সম্পত্তি, ওয়াকফ বোর্ডের নজরদারির আওতায় থাকায় যদিও সেই সম্পত্তির বর্তমান সম্পদের একটা পরিমাপ পাওয়া যায়, দেবোত্তর সম্পত্তির ক্ষেত্রে এই পরিমাপ কার্যত অসম্ভব, কারণ দেবত্তর সম্পত্তির আজও কোন নিয়ামক বোর্ড নেই। তাই ইশ্বর আল্লাহ আজ অসহায়।

সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে কাশী করিডোর নির্মাণের জন্য অসংখ্য দোকান, বাড়ির সাথে ভাঙা পড়েছে অনেক মন্দির যেগুলোর অনেকগুলিই ছিল দেবত্তর সম্পত্তি। ওখানেই ওয়াকফ সম্পত্তি জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়েও সম্প্রতি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে আমরা কাজিয়াতে যাচ্ছি না।

বেশ অনেক বছর আগের কথা, দমদম এয়ারপোর্ট সম্প্রসারণের জন্য অনেক ভাঙচুর চলেছিল। সেখানে একটি মসজিদও ছিল, বাকরা মসজিদ। নাহ্, ভাঙা হয়নি, আজও আছে। সেই সময় বরং এয়ারপোর্টের সম্প্রসারণ মসজিদকে রেখে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

গোটা দেশে প্রতিরক্ষা ও রেলমন্ত্রকের পরেই সব থেকে বেশি জমি আছে ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে। যার বাজারদর প্রায় কয়েক লক্ষ কোটি টাকা, যার অধিকাংশের হদিশ নেই। উত্তর প্রদেশের পর আমাদের বাংলাতেই সবচেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি আছে, যার কারণ বাংলায় দীর্ঘ সুলতানী, নবাবী এবং তুর্কী শাসন। ২০০৬ সালের সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ১,৪৮,২০০টি, যার মধ্যে মাত্র ২৩,০০০টার মত সম্পত্তি ছিল ওয়াকফ বোর্ডের আওতায়। আর ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আহমেদ নাকভি জানান, পশ্চিমবঙ্গে দখলীকৃত ওয়াকফ সম্পত্তির পরিমাণ ৩,০৮২। এর মানে কি এটাই দাঁড়ায়, ২০০৬ সালে ওয়াকফ বোর্ডের বাইরে থাকা প্রায় ১,২৫,০০০টি সম্পত্তির মধ্যে আর মাত্র ৩,০৮২ টি উদ্ধার করা বাকি?

নাহ্, ব্যাপারটা তেমন নয়। কেমন সেটা অথবা ওয়াকফ বোর্ডের প্রতিনিধিরা অথবা রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা বলতে পারবেন।

কলকাতায় ব্রিটিশরা টিপু সুলতানের পরিবারকে নির্বাসিত করেছিল, টালিগঞ্জে। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের সংলগ্ন সতীশ চন্দ্র রায় রোডের ওয়াকফ সম্পত্তি আজ মার্কেট কমপ্লেক্স। সেই সম্পদের এক আনাও বাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলিম সমাজের কাজে লাগেনি।

ভারতের বর্তমান শাসকের সব গল্পের উপসংহার বাংলাদেশের নোয়াখালীতে গিয়ে শেষ হলেও, তারা এটা বলে না, ১৯৬৪ সালে কেন দলে দলে মুসলিমরা ভারত ছেড়েছিল, কেন কলকাতার মুসলিম জনসংখ্যা তিন-চারটে পকেটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হতে থাকল। বাংলার ঐতিহাসিক সমাজ থেকে “ইসলামিক ইতিহাসে” স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করা সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেত্রী এই প্রসঙ্গ কোনদিন উত্থাপন করেননি। তিনি কি করেন, তা আসমুদ্রহিমাচল জানেন। আজ লর্ড কার্জন বেঁচে থাকলে এই সব কর্মকান্ড দেখে বড়ই খুশি হতেন।

মানিকতলার মুন্সীবাজারের ফতে আলী ওয়েসির মাজারের দান করা বিপুল ওয়াকফ সম্পত্তি আজ কোথায়? বেলেঘাটার জমিদার লতাফৎ হোসেনের ওয়াকফ সম্পত্তি আজ কোথায়? উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে থাকা রানী রাসমনীর দেবত্তর সম্পত্তি আজ কোথায়? এ কথা ঠিক যে, এই বিপুল সম্পত্তি উদ্ধার করা আর সম্ভব নয়। লক্ষাধিক পরিবারের বাস এই সব অঞ্চলে।

কিন্তু ওপরওয়ালার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা ওয়াকফ বা দেবত্তর সম্পত্তিগুলো দেশের প্রান্তিক মানুষের শিক্ষা-বিস্তার, সামাজিক কাজকর্ম, স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকেন্দ্র গড়তে কাজে লাগতে পারত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ওয়াকফ ও দেবত্তর সম্পত্তি নিয়ে প্রমোটারি রাজ কায়েম করা হয়েছে। এর জন্যে দায়ী এক শ্রেণীর বেইমান এবং অর্থলোলুপ মানুষ, কোন নির্দিষ্ট ধর্মের বা রাজনৈতিক দলের মানুষকে কখনোই এর জন্যে দায়ী করা যায় না।

সাচার কমিটির রিপোর্ট নিয়ে বিস্তর আন্দোলন করে যিনি নিজেকে বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মসীহা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তিনি প্রান্তিক মুসলিমদের দু একটা আলংকারিক সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া ছাড়া, মুসলিম সমাজের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিকাঠামোর বিন্দুমাত্র উন্নতি করেছেন কি? প্রশ্ন জাগে। কারণ ইমাম-মোয়াজ্জেমদের লোক দেখানো ভাতা দেওয়ার ফলে কেন্দ্রের শাসক দল সহজেই বাংলার বুকে একটা বড় আকারের ধর্মীয় মেরুকরনের বিভাজন রেখা কেটে ফেলতে পেরেছেন। যার উপজীব্য একে অপরের প্রতি তীব্র ঘৃণা। যেটা এই বাংলায় দশ-পনেরো বছর আগে কল্পনা করা যেত না।

এইভাবে ধর্মীয় বিভাজন খাড়া করে গত কয়েক বছরে একের পর এক হাতছাড়া হয়েছে ইশ্বর আল্লাহের সম্পত্তি। মানুষ দেখছে, শুধুই দেখছে। আর রাজনীতির কারবারিরা তীব্র মেরুকরনের অস্ত্রে শান দিয়ে এই অনাচারকে আস্কারা দিয়ে চলেছে।

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “যখনই কোন ব্যক্তি উঠিয়া বলে, আমার ধর্মই সত্য ধর্ম, আমার অবতারই একমাত্র সত্য অবতার, সে ব্যক্তির কথা কখনই ঠিক নহে, সে ধর্মের ‘ক’ পর্যন্ত জানে না। ধর্ম কেবল কথার কথা বা মতামত নহে অথবা অপরের সিদ্ধান্তে কেবল বুদ্ধির সায় দেওয়া নহে। ধর্মের অর্থ প্রাণে প্রাণে সত্য উপলব্ধি করা; ধর্মের অর্থ ঈশ্বরকে সাক্ষভাবে স্পর্শ করা, প্রাণে অনুভব করা, উপলব্ধি করা যে, আমি আত্ম-স্বরূপ আর সেই অনন্ত পরমাত্মা এবং তাহার সকল অবতারের সহিত আমার একটা অচ্ছেদ্য সম্বন্ধ রহিয়াছে। …তোমরা সকল দেশের সকল যুগের ধর্মপ্রাণ মহান নরনারীগণকে চিনিতে শিখ আর ইহাও লক্ষ্য করিও বাস্তবিক তাহাদের পরস্পরের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।” বিবেকানন্দ আজ জীবিত থাকলে “দেশদ্রোহী” তকমা পেতেন কিনা জানি না, কিন্তু রাজনীতির “সমাজ” নিয়ে খেলা দেখে বড্ড কষ্ট পেতেন।

দেবত্তর হোক বা ওয়াকফ, প্রায়শই অভিযোগ ওঠে ইশ্বর আল্লাহর সম্পত্তি হাতানোর। তা হোক খড়গপুরের ঝাড়েশ্বর মন্দিরের দেবত্তর পুকুর ভরাটের চেষ্টা (প্রত্যাশিত ভাবেই তাতে শাসক দলের কাউন্সিলর বলেছিলেন, ঘটনাটি তার জানা নেই), অথবা জলপাইগুড়িতে ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর কেন্দ্রীয় শাসক দলের চার তলা অফিস নির্মাণ, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে প্রতিটি বাংলার শান্তিকামী মানুষদের অবিলম্বে এই দখলদারীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা প্রয়োজন। না হলে, ধর্মীয় বিভাজনের রেখা টেনে রাজনৈতিক দালালরা দেবত্তর, ওয়াকফ অথবা ইশ্বর আল্লাহের নামাঙ্কিত সম্পত্তি লুঠ করতেই থাকবে।

রাজনৈতিক জুজুধান পক্ষরা বর্তমানে ঘৃণার কারবারে বিশ্বাসী হলেও, বাংলার মানুষ, বাংলার হিন্দু মুসলিম এমনটা কোনোদিন চাননি, চাইবেন না। তাই আজও কলকাতার দেবত্তর সম্পত্তি মার্বেল পালেসের মধ্যে অবস্থিত মসজিদের দেখভাল করে দেবত্তর ট্রাস্ট, আবার কলকাতায় ইহুদীদের ধর্মস্থান এল বেথেল বা মেগান ডেভিড সিনাগগের দেখভালের দায়িত্বে থাকেন মুসলিমরা। বছর কুড়ি আগে, একবার মহাষ্টমীর ভোগ দিয়ে রোজা ভেঙেছিল। নানুরে বছর চারেক আগে রাস্তা সম্প্রসারণের কারণে মন্দির ভাঙা পড়লে, এগিয়ে আসেন স্থানীয় মুসলিমরা। নিজেরা চাঁদা দেওয়ার পাশাপাশি মন্দির কমিটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে গ্রামে গ্রামে গিয়ে চাঁদা তুলে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আর্কষণীয় কালীমন্দির নির্মাণে সহায়তা করেন। আর সেই মন্দিরের উদ্বোধন হয় মৌলবীর হাতে। এটাই সম্প্রীতি। মঞ্চে উঠে মুখে বলে সম্প্রীতি আসে না, তার জন্যে পদক্ষেপ নিতে হয়। তাই ১৯৯২-এ বাবরি পতনের পর, বাংলায় অস্থিরতা তৈরি হয়নি। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সেই সময় বলেছিলেন, “সরকার না চাইলে দাঙ্গা হয় না।” যথার্থ বলেছিলেন। তবে সেই দিন আর নেই। ফিরবে কিনা জানা নেই।

ধন্যবাদান্তে,
রাইজ অফ ভয়েসেস

তথ্যসূত্র :

a) http://centralwaqfcouncil.gov.in/
b) http://auqafboardwb.org/
c) http://www.minorityaffairs.gov.in/sites/default/files/Sachar%20Committee%20Recommendations-English.pdf
d) https://eisamay.com/west-bengal-news/kolkata-news/wakaf-board/articleshow/27120492.cms
e) https://nbtv.news/walkup-property-on-b/
f) https://www.bangareport.com/illegal-construction-in-baharampur-by-occupying-waqf-property-thunto-jagannath-waqf-board/
g) https://www.anandabazar.com/west-bengal/%E0%A6%A6-%E0%A6%AC-%E0%A6%A4-%E0%A6%A4%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A6%A4-%E0%A6%A4-%E0%A6%97%E0%A6%B2-%E0%A6%B0-%E0%A6%95-%E0%A6%9F-%E0%A6%B9%E0%A7%9F-%E0%A6%89%E0%A6%A0%E0%A6%9B-%E0%A6%B8-%E0%A6%AC-%E0%A7%9F-%E0%A6%A4%E0%A6%A6-%E0%A6%B0-1.247524
h) http://www.kolkatasaradin.com/crime/tmc-mla-lovely-maitra-takes-stock-of-illegal-buildings-corruption-of-local-tmc-leaders-in-sonarpur/
i) https://www.firstpost.com/firstcricket/sports-news/centre-tells-ls-nearly-17000-waqf-board-properties-under-encroachment-nationwide-punjab-has-highest-number-7683961.html
j) https://pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=1539192
k) https://uttarbangasambad.com/allegation-of-grab-of-debottar-property-with-the-help-of-trinamool/
l) https://epurbabardhaman.com/anganwadi-on-debottar-property-the-local-club-took-possession-of-the-property/
m) https://kharagpur24x7.in/state/district/paschim-medinipur/14948/
n) https://timesofindia.indiatimes.com/city/kolkata/kolkatas-marble-palace-mosque-run-by-trust-dedicated-to-jagannath/articleshow/53088025.cms
o) https://aajkaal.in/news/state/nanur-ma-kali-temple-azbx