সার-কথা / The Tale of Fertilizers

আজ আবার একটু “গেরামের গপ্পো!”

গত প্রায় মাস তিনেক ধরে গ্রামবাংলা জুড়ে সারের কালোবাজারি দাপিয়ে চললেও আমাদের শহরের মানুষদের তেমন কোন হুঁশ নেই। বেশিরভাগ মানুষের অবশ্য নজরেও পড়েনি কারণ সংবাদ মাধ্যমগুলির মধ্যে দু-একটি বাদে বাকি কেউই এই খবরটা নিয়ে তেমন “রা” কাটে নি। আর যাদের নজরে পড়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই উপেক্ষা করেছেন এই ভেবে যে আমরা তো আর চাষবাস করি না! কাজেই আমাদের কি! বরং তার বদলে আমরা নেটফ্লিক্স -আমাজন প্রাইমে মজে থেকেছি অথবা জলনুপূর, মিঠাই, ইষ্টিকুটুম ইত্যাদির সাংসারিক কূটকচালিতে ডুব দিয়েছি! আর ভেবেছি এসবের ফাঁকে ফাঁকে এই যে সিঙ্ঘু বর্ডারের খবর রেখেছি, ট্যুইটার-ইন্সটা-ফেসবুকে অন্নদাতাদের হয়ে আপডেট দিয়েছি এই অনেক!

কিন্তু এই ধারণাটা আসলে ঠিক নয়! থলে হাতে বাজারে গিয়ে দামের ছ্যাঁকা খেয়ে অথবা টিভিতে পাইকারি বাজার, মানিকতলা বাজার, যদুবাবুর বাজার কিম্বা উল্টোডাঙ্গা বাজারের দরদাম শুনে চোখ কপালে তুলে যখন সব্জিওলা থেকে সরকার সব্বাইকে গাল পাড়ি তখন নিজেদেরকে সেই গালিগালাজ থেকে যে অজানা কারণে ছাড় দিয়ে ফেলি আজকে সেই অজানা কারণের খোঁজ খবর করবো আমরা।

যদিও শুরুটা করবো সবার জানা খুবই সাদামাটা কিছু তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে। যেকোন জিনিষের দাম নিয়ন্ত্রনে থাকে যদি বাজারে তার যোগান ঠিক থাকে। চাল-ডাল-তেল -আটা থেকে শুরু করে রোজকার আনাজপাতি ফলসব্জি কোনকিছুই এর ব্যতিক্রম নয়। বাজারে এইসমস্ত কৃষিজাত পণ্যর যোগান বাড়বে বা ঠিক থাকবে যদি আমরা যথেষ্ট পরিমাণ জমিতে এই ফসলগুলি চাষ করতে পারি।

এখন একজন কৃষক ঠিক কত পরিমাণ জমি চাষ করবে তা ঠিক হয়ে যায় মুলতঃ মরশুমের শুরুতেই এবং সেটা নির্ভর করে তার মুলধন বা আর্থিক যোগানের ওপর এবং কি পরিমাণ জমিতে সে সার ছড়িয়ে চাষযোগ্য করছে তার ওপর। সার হল উদ্ভিদের জন্ম ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুন সম্পন্ন খাদ্য যা ক্ষেতের মাটিতে বীজ বপনের আগে ছড়ানো হয় যাতে উদ্ভিদ মাটি থেকে তা গ্রহণ করতে পারে। সারে মুলতঃ কার্বন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার ইত্যাদি থাকে। কাজেই মরশুমের শুরুতে যথেষ্ট পরিমাণ সারের যোগান না থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই কম জমিতে চাষ আবাদ হবে এবং তারফলে পরবর্তীতে বাজারে ফসলের যোগান কম আসবে। স্বভাবতই এতে জিনিষের দাম বাড়বে। আবার চাষীদের যদি বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হয় সেক্ষেত্রেও তারপক্ষে বেশি পরিমাণ জমি চাষ করা সম্ভব হয় না। ফলাফল সেই এক! বাজারে ফসলের যোগান কমে যাবে এবং চাল-ডাল শাকসবজি-আনাজপাতির দাম বাড়বে। কাজেই সারের যোগান এবং দামের ওপর আমাদের সব্বাইকার ঘরে কোন কোন আনাজপাতি ও দানাশস্য কি কি পরিমাণ ঢুকবে তা অনেকখানি নির্ভর করে। আর তাই সারের যোগান বা “কালোবাজারি” র খবর চোখে পড়লে “গেরামের খবর” বলে এড়িয়ে না যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

কিন্তু ঠিক কেন এবং কিভাবে সারের যোগান কম বা বেশি হচ্ছে এবং কালোবাজারি হচ্ছে জানতে হলে বুঝতে হবে তার বিপণন পদ্ধতিটা।

আমাদের দেশে তথা রাজ্যে দুই ধরণের সার ব্যবহার করা হয়। ইউরিয়া এবং নন-ইউরিয়া সার। কেন এই পদ্ধতিতে প্রকারভেদ করা হল সেটা জানতে হলে সবার আগে বুঝতে হবে ভারতের কৃষকরা যে দামে সার কেনেন তা তার উৎপাদন খরচের থেকে কম। অর্থ্যাৎ ভারত সরকারের তরফে ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থা আছে এই দুই প্রকার সারের ক্ষেত্রে। কিন্তু সেই দেওয়ার পদ্ধতিটা আলাদা।

ইউরিয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ খুচরো বাজারদর যাকে বলে “MRP” ভারত সরকার নিজে ঠিক করে। এই মুহুর্তে ভারত সরকার নির্ধারিত ইউরিয়ার খুচরো বাজারে ৫০ কেজি ব্যাগের দাম ২৬৮ টাকা এবং ৪৫ কেজি ব্যাগের দাম ২৪২ টাকা। প্রতিটন ইউরিয়া পিছু একজন খুচরো বিক্রেতা পান ৫০ টাকা এবং ডিলার পান ৩৫৪ টাকা। আর এই সরকার নির্ধারিত খুচরো বাজারদর এবং উৎপাদন খরচের ফারাকটা সরকারের তরফে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী/বিক্রয়কারী সংস্থাকে ভর্তুকি দেওয়া হয়।

অন্যদিকে নন-ইউরিয়া সার যেমন ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (DAP), মিউরেট অফ পটাশ (MOP) অথবা এনপিকে (NPK) এর ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী/বিক্রয়কারী সংস্থা এগুলির খুচরো বাজার মূল্য বা দাম নিজের নিজের মত করে নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের তরফে ভর্তুকি দেওয়া হয় সারে উপস্থিত নিউট্রিয়েন্ট বা পুষ্টিকর উপাদানের এর পরিমাণের ওপর। যেমন ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট এ থাকে ১৮% নাইট্রোজেন ও ৪৬% ফসফরাস। আবার মিউরেট অফ পটাশিয়াম এ থাকে ৬০% পটাশিয়াম। এনপিকে এর সর্বাধিক ব্যবহৃত সারটির নাম NPK ১০-২৬-২৬ যেখানে নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশিয়াম থাকে যথাক্রমে ১০%,২৬% ও ২৬%। এখন এই বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানের ওপর এই মুহুর্তে ভারত সরকারের প্রদেয় ভর্তুকির পরিমাণগুলি হল – নাইট্রোজেন – ১৮.৭৮৯ টাকা /কিলোগ্রাম, ফসফেট- ৪৫.৩২৩ টাকা/ কিলোগ্রাম, পটাসিয়াম-১০.১১৬ টাকা/ কিলোগ্রাম এবং সালফার-২.৩৭৪ টাকা/ কিলোগ্রাম । এ প্রসঙ্গে বলে রাখি এই নন ইউরিয়া সার গুলির এক বস্তা বলতে ৫০ কিলোগ্রামের বস্তা বোঝায়। এখন ৫০ কেজির DAP তে নাইট্রোজেন থাকে ৯ কেজি এবং ফসফেট থাকে ২৩ কেজি। কাজেই ৫০ কেজির DAP বস্তায় ভর্তুকি হবে কমবেশি ১২১১ টাকা (~ ৯ X ১৮.৭৮৯ + ২৩ X ৪৫.৩২৩)। এই একই পদ্ধতিতে অন্যান্য নন-ইউরিয়া সারের ভর্তুকির পরিমাণ কষা হয়ে থাকে।

এবছর আবার মহামারীর কথা ভেবে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট এবং এনপিকে র ওপর অতিরিক্ত এককালীন বস্তা পিছু যথাক্রমে ১০০ টাকা এবং ৪৩৮ টাকা ছাড় বা দেওয়া হয়েছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে।

আর এই সমস্ত ভর্তুকিটাই এখন দেওয়া হয় অনলাইনে একজন কৃষক একজন একজন খুচরো বিক্রেতার থেকে সার কেনবার পর। প্রত্যেক সারের খুচরো বিক্রেতার কাছে এখন থাকে পিওএস বা পয়েন্ট অফ সেলস যা সরাসরি যুক্ত থাকে ভারত সরকারের ই-উর্বারক DBT পোর্টালের সাথে। কোন কৃষককে ভর্তুকিতে সার কিনতে গেলে তাকে আধার কার্ড /কিষান ক্রেডিট কার্ড নম্বর দিতে হবে। সেইসঙ্গে কৃষকের নাম, তার বায়োমেট্রিক আইডেন্টিটি, সারের পরিমাণ এবং উৎপাদনকারী/বিক্রয়কারী সংস্থার নাম নথিভুক্ত করা হয় পিওএস এ। এইভাবে সার বিক্রি সরকারের পোর্টালে নথিভুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী/বিক্রয়কারী সংস্থা ভর্তুকির আবেদন করেন এবং সেইমত টাকা চলে যায় ঐ সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

এখন এই সারের যোগানের ব্যাপারে আমরা অনেকখানি নির্ভর করে থাকি বিদেশ থেকে আমদানীর ওপর। সার উৎপাদনের কাঁচামাল গুলি যেমন প্রাকৃতিক গ্যাস, ফসফেট এবং অ্যামোনিয়ার একটা বড় অংশ আমরা বিদেশ থেকে আমদানী করি। যোগানের ব্যাপারেও ইউরিয়ার ক্ষেত্রে ২৭%, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেটের ক্ষেত্রে ৫৫% এবং এনপিকের ক্ষেত্রে ৮% আমদানী করা হয়। আর মিউরেট অফ পটাশ এর প্রায় পুরোটাই আমরা বিদেশ থেকে আমদানী করি। কিন্তু গত দুবছরে বিশ্বজোড়া মহামারীর কারণে সেই যোগানে টান পড়েছে। ফলে সারের দাম বেড়েছে অনেকখানি। যে সমস্ত সংস্থা সার উৎপাদন ও বিক্রয়ের সাথে যুক্ত আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের তরফে আমদানীও কম করা হয়েছে । কারণ চাষীদের পক্ষে বেশি দাম দিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণে সার কিনে সমস্ত জমি চাষ করা সম্ভব নাও হতে পারে। দ্য ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশান অফ ইন্ডিয়ার তরফে যে তথ্য সামনে আনা হয়েছে তাতে দেখাও গেছে এবছরের প্রথম অর্ধবর্ষে ইউরিয়া , ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট এবং মিউরেট অফ পটাশের আমদানী গতবছরের তুলনায় কমেছে যথাক্রমে ১২%, ৩৬% এবং ৪৫%।

এদিকে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ার অর্থ সরকারের ওপর ইউরিয়ার ক্ষেত্রে ভর্তুকির বোঝা বেড়ে যাওয়া। তাই অভিযোগ উঠেছে নন ইউরিয়া সারের ক্ষেত্রে ভারত সরকারের তরফে সময়মত ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। উল্টে প্রথম দিকে ভারত সরকারের তরফে দফায় দফায় সার যোগানের ঘাটতির কথা লোকসভার ভেতরে এবং বাইরে অস্বীকার করা হয়েছে। । শেষমেশ চাপে পড়ে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি নন-ইউরিয়া সারের ক্ষেত্রে খারিফ ফসলের জন্য যে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল তা রবি শষ্যের জন্যও অনুমোদন দেওয়া হয়। সঙ্গে ঘোষনা হয় ব্যাগ প্রতি এককালীন ছাড়ের কথা। কিন্তু এরপরেও কেন্দ্রীর রসায়ন ও সার দপ্তরের তথ্যও বলছে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেশে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেটের যোগানে ঘাটতি ছিল প্রায় ৫০% এবং ২১%। একইভাবে অক্টোবর মাসে পটাশ সারের ঘাটতি ছিল কমবেশি ৬০% যা নভেম্বরে বেড়ে হয় ৭১%। এমনকি ঐ একই সময় ইউরিয়ার ঘাটতি ছিল ২৫%-৩০% এর আশপাশে।

অর্থ্যাৎ এবছর সারের যোগানের ঘাটতির কারণে কমবে ফসলের উৎপাদন এবং বাড়বে বাজারদর। এটা একপ্রকার অবসম্ভাবী।

এখন এতটা পড়বার পর সব দায় কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে “যতদোষ নন্দঘোষ” এর মত ফেলে দিতে আমরা চাই না। কারণ এরপর রাজ্যস্তরে সারের যে পরিমাণ বেআইনি মজুত এবং কালোবাজারি শুরু হয়েছে তা বন্ধ করবার দায়টা কিন্তু রাজ্য সরকারের। সেখানে আমাদের রাজ্য সরকারের তরফে তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে চোখে পড়ছে না। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সর্বত্র চলছে সারের কালোবাজারি। অভিযোগ ডিলার /খুচরো বিক্রেতারা হাত মিলিয়ে চালাচ্ছে এই ফাটকাবাজি। কয়েকটা উদাহরণ শুনলেই বুঝতে পারবেন এর বহরটা। বীরভূম জেলার সিউড়িতে ইফকো কোম্পানির এনপিকে সারের বস্তার গায়ে দাম লেখা রয়েছে ১১৭৫ টাকা অথচ খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ টাকায়। “পরশ” ব্র্যান্ডের এনপিকে র দাম ১৩৯০ টাকা হলেও নেওয়া হচ্ছে ১৬৯০ টাকা। বীরভূম জেলা হল এক স্বনামধন্য তৃণমূল নেতার ডেরা ! ওনার অজ্ঞাতে এমন কাজ চলছে বিশ্বাস করা খুব মুশকিল! আবার উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলায় একদল চাষীর অভিযোগ গত দুবছরের সার বিক্রির সময় পয়েন্ট অফ সেলস এর সাথে আধার লিঙ্কিং ঠিক মত করা হয় নি। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেব মত জেলায় সারের মজুত রয়েছে এবং তাই সরকারের তরফে সারের বন্টন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই জেলায় ইউরিয়ার ২৬৬ টাকার ব্যাগ ব্ল্যাক মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়। ১০৪০ টাকার পটাশের ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকায়। একই অবস্থা হুগলী বর্ধমান বাঁকুড়া মেদিনীপুর থেকে শুরু করে দিনাজপুর আলিপুরদুয়ারে। ইউরিয়া সারের দাম ব্যাগ প্রতি কমবেশি ২০০ টাকা এবং নন ইউরিয়া সারের দাম ব্যাগ প্রতি কমবেশি ৭০০-১০০০ টাকা অতিরিক্ত দাম দিয়ে ( মানে প্রায় ৬০%- ৯০% বেশি) চাষীকে খোলা বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে। মানে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া ভর্তুকির বেশিরভাগ টাকাটাই এই শাসক আশ্রিত কালোবাজারির কারবারিরা আত্মসাৎ করছে। এতে চাষীরা তাদের হাতের পুরো জমি চাষ করতে পারছেন না আর্থিক অভাবের কারণে। ফলে আগামীদিনে একদিকে যেমন যোগান কমায় ফসলের দাম বাড়বে ঠিক তেমনই কালোবাজারের অতিরিক্ত খরচটাও আপনাকে আমাকে বাজারে গিয়ে আনাজপাতি শাকসব্জি চাল-ডাল ইত্যাদি কিনতে গিয়ে মেটাতে হবে। মানে একবার আমার আপনার করের টাকায় ভর্তুকি দেওয়া হল। কিন্তু চাষী সেই ভর্তুকি না পাওয়ায় ফের আমাদেরকে বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে আনাজপাতি শাকসব্জিও কিনতে হল। এবার কি মনে হচ্ছে না সারের কালোবাজারির সমস্যাটা যতটা একজন চাষীর ঠিক ততটাই আপনার বা আমার বা বলতে গেলে আমাদের সব্বার। আর এর অনেকখানি দায় কিন্তু রাজ্য সরকারের!

কিন্তু আমরা সংবাদ মাধ্যমগুলিতে যা দেখি বা পড়ি তা হল যেই জিনিষপত্রের দাম বাড়ে সঙ্গে সঙ্গে ফুটেজখোর নেতামন্ত্রীরা টিভির ক্যামেরা বুম সাথে নিয়ে টাস্ক ফোর্সের লোকজন সমেত দিন কয়েক শহরের বাজারগুলোতে ঘুরে বেরিয়ে হাওয়া গরম করে “প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে” এমন একটা হাওয়া তুলে নিঃশব্দে কেটে পড়েন! দাম যে কে সেই থাকে। আর আমরাও আবার সন্ধ্যেবেলার টক শো তে পরবর্তী কোন চটকদার টপিক নিয়ে টাইম পাশ করি।

কাজেই সময় এসেছে বোকাবাক্স /ধোঁকাফোন থেকে বেরিয়ে এসে সচেতন হওয়ার। ধৈর্য ধরে “গেরামের গপ্পো” গুলো জানবার! শোনবার! তাদের হয়ে চিৎকার করবার। কারণ সেই চিৎকার ঘুরিয়ে আমাদেরও কাজে লাগে। আর এটা না করতে পারলে পরের বার জিনিষপত্রের দাম বাড়লে সরকার কিম্বা পাড়ার বাজারওলা দোকানদারদের গাল পাড়বার আগে আমরা নিজেদের জন্য যেন একটা চার অক্ষর তৈরি রাখি!

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস

পুনশ্চঃ
এই সার যোগানের তুমুল আকালের মধ্যে আপনাদের জানাতে চাই যে একদল “অনুপ্রাণিত” মস্তানদলের দৌরাত্মে হলদিয়ায় রাজ্যের একমাত্র সার কারখানা “ইন্দোরামা” বন্ধ হতে বসেছে। ৩২০০ টন দৈনিক সার উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কারখানাটিতে শাসকের দাদাগিরিতে উৎপাদন কমতে কমতে ১৮০০ টনে ঠেকেছে। এদের উৎপাদিত “পরশ” এনপিকে একটি জনপ্রিয় বহুল ব্যবহৃত সার । উৎপাদন কমে যাওয়ায় মেদিনীপুর হুগলী ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সারের যোগানে টান পড়বে। আর সেই টান কিন্তু অচিরেই আপনার আমার পকেটেও মালুম হবে।

তথ্যসূত্র
a) https://pib.gov.in/PressReleaseIframePage.aspx?PRID=1763349#:~:text=28%2C655%20crore%20for%20Rabi%202021%2D22&text=The%20Cabinet%20Committee%20on%20Economic,31st%20March%2C%202022).
b) https://fert.nic.in/index.php/fertilizer-policy/urea-policypricing-and-administration
c) https://www.worldfertilizer.com/special-reports/24092020/indias-fertilizer-under-pressure/
d) https://indianexpress.com/article/explained/how-fertiliser-subsidy-works-6793395/
e) https://www.bloomberg.com/news/articles/2021-11-29/black-market-for-fertilizers-is-booming-in-india-as-prices-soar
f) https://timesofindia.indiatimes.com/city/kolkata/potato-prices-set-to-soar-in-bengal-as-fertilizer-crunch-untimely-rain-hit-production/articleshow/88155543.cms
g) https://www.worldfertilizer.com/special-reports/24092020/indias-fertilizer-under-pressure/
h) https://indianexpress.com/article/india/indian-farmers-opt-for-complex-fertilisers-7651709/
i) https://www.livemint.com/market/black-market-for-fertilizers-is-booming-in-india-as-prices-soar-11638150806153.html
j) https://scroll.in/article/1012787/fact-check-centre-claims-theres-no-fertiliser-shortage-in-india-its-data-tells-a-different-story
k) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2021-12-17/202112170046364.jpg&category=0&date=2021-12-17&button=
l) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2021-12-12/2021121122370610.jpg&category=0&date=2021-12-12&button=
m) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2021-12-07/202112062238132.jpg&category=0&date=2021-12-07&button=
n) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2021-12-12/2021121122370610.jpg&category=0&date=2021-12-12&button=
o) http://bangla.ganashakti.co.in/Home/PopUp/?url=/admin/uploade/image_details/2021-12-07/202112062240543.jpg&category=0&date=2021-12-07&button=
p) https://www.anandabazar.com/west-bengal/common-people-worried-about-the-high-price-of-vegetables-even-in-winter/cid/1324147#.YeZG-OJFdPM.link