বাই বাই সাইকেল / Cycle Ban in Kolkata

সাইকেলে নিষেধাজ্ঞা আবারও ফিরতে চলেছে মহানগরীতে। কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রের একটি সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শহরের ৭১টি রাস্তা এবং সেতুতে সাইকেল চালানো সম্পূর্ণ বা আংশিক নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু পথ দুর্ঘটনা এবং ট্রাফিক বেড়ে যাওয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে।
পথচলতি এক সাইকেল আরোহীকে কলকাতা পুলিশের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মতামত জানতে চাওয়া হলে, তিনি উল্টে প্রশ্ন রাখেন, “সব এক্সিডেন্ট কি শুধু সাইকেলে হয়? বাইকে বা গাড়িতে এক্সিডেন্ট হয় না?”। সাথে উনি আরও বলেন, “আসলে কেউ সাইকেল চললে সরকারের তো রোজগার হয় না, তাই হয়তো এইসব।”
প্রসঙ্গত, সরকারের সাইকেল থেকে আয় কেবলমাত্র সাইকেল কেনার সময়। সেটাও ৫% জিএসটি। যা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আধাআধি ভাগ হয়ে যায়।
সাথে এটাও ঠিক, সাইকেল চালাতে পেট্রোল বা ডিজেল লাগে না, লাগে না রোড ট্যাক্স, লাগে না ইনসুরেন্স। বরং সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব যান। ডাক্তারবাবুদের মতে, নিয়মিত সাইকেল চালালে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। প্রান্তিক মানুষের সুলভে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও সাইকেলের বিকল্প মেলা মুশকিল। আর সবশেষে এই মহামারীকালে সোশাল ডিস্ট্যানসিং মেনে যাতায়াতের জন্যে, সাইকেলের জুড়ি মেলা ভার। এসবের পরেও কলকাতার ৭১টি রাস্তা থেকে বিদায় নিতে চলেছে, সাইকেল। দেশের বাইরে যখন সাইকেল চালানোকে আরো উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে তখন আমাদের মহানগরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক কয়েকটি রিপোর্টে দেখা গেছে আমাদের কলকাতা বায়ুদূষনের নিরিখে দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে। রাজধজানী দিল্লীতে এই বায়ুদূষনের কারণেই আজ ৩রা ডিসেম্বর থেকে অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য সরকারের তরফে স্কুল বন্ধ রাখবার নির্দেশ জারি হয়েছে।
মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে রাজ্যজুড়ে রেড ভলেন্টিয়ার্সদের অভাবনীয় পরিষেবার কথা স্মরণ করিয়ে কোভিডবিধি মেনে চলবার এক সতর্কবার্তা ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মাধ্যম গুলিতে – “কোভিডবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। প্রকৃতির থেকে অক্সিজেন নিন, রেড ভলেন্টিয়ার্সদের থেকে নয়”। কিন্তু বায়ুদূষণের এই রমরমার মধ্যে সরকারী বদান্যতায় সাইকেল চলাচলে এমন নিষেধাজ্ঞা কলকাতার থেকে “অনুপ্রাণিত” হয়ে রাজ্যের অন্যান্য বড়-ছোট-মাঝারি শহর গুলিতেও দূর্ঘটনার অজুহাতে ক্রমশঃ ছড়িয়ে পড়লে পরিবেশ থেকে সকলের নেওয়ার মত অক্সিজেন বাঁচবে তো !
আসলে পরিবেশ বা স্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব যতখানি মানুষের, ততোটাই দেশের ও রাজ্যের সরকারের। তাই সেই সরকার বাহাদুরদের কাছেই এমন হঠকারি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন রইল।
শীঘ্রই ফিরছি, আরেকটি খবর নিয়ে যে খবর আপনাদের চোখে পড়েনি।
তথ্যসূত্রঃ-
a) https://timesofindia.indiatimes.com/…/arti…/88016403.cms
b) https://timesofindia.indiatimes.com/…/arti…/86436831.cms
c) https://timesofindia.indiatimes.com/…/arti…/88047942.cms
d) https://www.hindustantimes.com/…/story…
Comments are closed.