শৈল্পিক তোপধ্বনি এবং উলঙ্গ প্রজা / Gun Salute and Naked Vassals

যে পরিচালক মুন লাইট, আবছায়া, আধো অন্ধকার – তার ছবিতে ধরেছিল। করুনরস, নম্র গতি পছন্দ করত, তাকে দিয়েই শুরু হয় এই ঢক্কানিনাদ। মৃতদেহ ঘিরে ছত্তিস তোপ কি সালামি। মৃতদেহ উঠে বসে বলেনি “কি ভয়ঙ্কর শব্দ! শান্তিতে মরতেও দেবেন না!” গায়কটিও উঠে বসে বলবেন না “গান স্যালুটে কোনো সুর নেই, একটু সুরে সুরে বিদায় নেয়ার সুযোগটাও কেড়ে নিলেন!”

কিন্তু আমরা যারা জীবিত, তারা তো বলতে পারি, শিল্পীর মৃত্যুকে একটু নীরবতা দাও। ওদের একটু বিজনতা, নিভৃতি প্রাপ্য। সাংস্কৃতিক গুণ্ডামির লিমিট থাকে? দেখছি থাকেনা। “অব্যাপারেষুব্যাপারী” বলে একটা শব্দ আছে। সহজ অর্থ, যার কাজ তারই সাজে, আনাড়ির লাঠি বাজে। ওই লাঠি বাজার শব্দই এখন রাজ্যে শৈল্পিক নুপুর নিক্কন বলে বিজ্ঞাপিত হচ্ছে। একাডেমি থেকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বইমেলা সর্বত্র ওই ইতরতর সাংস্কৃতিক মাসলবাজি, সাংস্কৃতিক গুন্ডা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। যে বিষয়ে হাঁ করার যোগ্যতা কখনো তৈরি হবেনা, সে বিষয়ের নতুন বর্ণপরিচয় হাঁকছে। ছাগলকে বোকে বানানোর দায়িত্ব দিয়ে, রজনীগন্ধার ক্ষেতে ছেড়ে দিলে যা যা হতে পারে, তাই তাই হচ্ছে। যারা ছেড়ে দিয়েছি, যারা বাঁধছিনা, একদিন ওই ছাগল তাদের পরনের কাপড়টাও খেয়ে নিয়ে “উলঙ্গ প্রজা” নামে নতুন ছড়া লিখবে। ডামাডোল ও চুরি-ডাকাতিতে ব্যস্ত এদের যারা “জনবাদী” নাম দিচ্ছেন, তারা অবশ্যই সেটাকে বাংলা সাবভার্সিভ ছড়ার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ মেনে নন্দনের দেয়ালে উৎকীর্ণ করবেন, এটুকুই আশা।