‘তারিখ পে তারিখ’ – আদানি-হিন্ডেনবার্গ কেস / The Damini Factor

আজ অনেকদিন পর রাইজ অফ ভয়েসেস ফের একবার আদানি-হিন্ডেনবার্গ কেস নিয়ে দু কলম লিখতে বসেছে। তা প্রায় এক বছর হতে চললো। আমাদের প্রথম প্রতিবেদন ‘হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট ও কিছু প্রশ্ন’ প্রকাশিত হয় জানুয়ারি ৪, ২০২৩ তারিখে এবং দ্বিতীয় প্রতিবেদন ‘হিন্ডেনবার্গ বিতর্ক-চৌকিদার চোর ধরতে রাজি কি?’ প্রকাশিত হয় ফ্রেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩ তারিখে।
এই দুটো প্রতিবেদন পড়ে আমাদের বহু পাঠকের ভুরু কুঁচকে গিয়েছিল।

কারণ সে সময় যখন হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সামনে আসবার পর আদানি গ্রুপের শেয়ারের দামে ব্যপক ধস নেমেছে, তখন আমরা স্রোতের বিপরীতে গিয়ে বুক ঠুকে দুটো দাবি করেছিলাম।

এক, ভারত সরকারের কোন তদন্তকারি সংস্থা অথবা নিয়ামক সংস্থা সেবি’র পূর্ণাঙ্গ তদন্তে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর সারবত্তা বা সত্যতা প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত আদানি গ্রুপ ডুবছে না।

আর দুই, এসবিআই/এলআইসি’র মত সরকারি সুবৃহৎ ব্যাঙ্ক ও বীমা কোম্পানিগুলি যারা আদানি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ দিয়েছে বা তাতে বিনিয়োগ করেছে, সেগুলোরও শেয়ারের দরে আদানি গ্রুপের শেয়ার বাজারে ধসের কারণে পতন দেখা দিলেও তা সাময়িক । তাছাড়া আমরা এও স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলাম আদানি গ্রুপে এই সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্ক ও বীমা কোম্পানিগুলির ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ তাদের খাতায় থাকা মোট ঋণ/বিনিয়োগের ১% ও নয়। এমনকি প্রদেয় ঋণের অধিকাংশই আদানি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির ‘ক্যাশ ফ্লো’/ অ্যাসেট বা সম্পত্তি দ্বারা সুরক্ষিত। কাজেই এসবিআই বা এলআইসি ডুবছে না। আদানি গ্রুপ ডুবে গেলেও ডুববে না।

আজ একবছর পর দাঁড়িয়ে দেখলে সবাই মানবেন আমরা সঠিক ছিলাম। আদানি গ্রুপের সবকটা কোম্পানি স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে। কারণ এখনও পর্যন্ত সেবির তদন্তে আদানি শিল্পগোষ্ঠী দোষী সাব্যস্ত হয়নি। তদন্ত চলছে। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সামনে আসবার পর তাদের শেয়ারের দামেও যে পতন হয়েছিল তাও তারা অনেকটাই সামলে উঠেছে। আর এসবিআই বা এলআইসি’র মত সরকারি ব্যাঙ্ক ও বীমা কোম্পানিগুলোরও ডুবে যাওয়ার কথা ছিল না এবং ডোবেওনি।

আজ আমরা ফের সেই হিন্ডেনবার্গ-আদানি বিতর্ক নিয়ে প্রতিবেদন লিখছি, কারণ ফের একবার আমাদের স্রোতের বিরুদ্ধে হাঁটবার দরকার পড়েছে। কারণ আজ এই হিন্ডেনবার্গ -আদানি বিতর্ক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে যেটাকে একশ্রেণীর সংবাদমাধ্যম এবং অত্যুৎসাহীদের পক্ষ থেকে ‘রায়’ বা ‘জাজমেন্ট’ বলে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট আজ যা বলেছে তা হলো-

  • হিন্ডেনবার্গ সংস্থার বিরুদ্ধে আদানি গ্রুপের তরফে যে ‘শর্ট সেলিং’ এর অভিযোগ তোলা হয়েছে তার সত্যতা খতিয়ে দেখবার জন্য সেবি/ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
  • হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কৃত্রিম ও অবৈধ উপায়ে শেয়ারের দাম বাড়ানোর যে অভিযোগ উঠেছিল তা খতিয়ে দেখবার জন্য একটি ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সদস্যরা হলেন ও পি ভাট (প্রাক্তন এসবিআই চেয়রাম্যান), বম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে পি দেওধর, কে ভি কামাথ (প্রাক্তন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ম্যানেজিং ডিরেক্টর), নন্দন নিলেকানি (প্রাক্তন ইনফোসিস কর্তা), বিশিষ্ট আইনজীবী সোমশেখরন সুদর্শন এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ এম সাপ্রে। এই বিশেষজ্ঞ কমিটির নিরপেক্ষতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়। পিটিশনের বক্তব্য ছিল এই কমিটির কয়েকজনের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সাথে পরোক্ষ ব্যবসায়িক/পেশাদারী সংযোগ আছে। সে অভিযোগও আজ সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়।
  • পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এও জানিয়ে দেয় তারা এই মুহুর্তে হিন্ডেনবার্গ ইস্যুতে নিয়ামক সংস্থা সেবি’র তদন্তের ওপরই আস্থা রাখতে চাইছে। কোন ‘সিট’ গঠনের কথা অথবা সিবিআই/ইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কথা ভাবছে না।
  • এবং সবশেষে সুপ্রিম কোর্ট সেবি’কে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে ওঠা মোট ২৪ টি অভিযোগের সবকটির তদন্ত শেষ করে আগামী তিন মাসের মধ্যে পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। আপাতত যা জানা যাচ্ছে ২২ টি অভিযোগের তদন্ত সেবি সম্পূর্ণ করলেও ২ টি অভিযোগের তদন্ত এখনও শেষ হয় নি।

অর্থ্যাৎ ওপরের পর্যবেক্ষণ থেকে স্পষ্ট, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সেবি’র যেমন তদন্ত চলছিল তেমনই চলবে। এই মুহুর্তে সুপ্রিম কোর্ট এব্যাপারে অতিসক্রিয়তা দেখাতে চাইছে না। আর তাই সেবি’কে সরিয়ে নতুন করে তদন্তের জন্য কোন ‘সিট’ গঠনের পক্ষে রায় দেয়নি।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ গুলোকে একশ্রেণীর বিজেপি ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম এবং ব্যক্তি এমনভাবে সমাজমাধ্যমে তুলে ধরছেন তাতে তৈরি হচ্ছে নানা বিবিধ ভুলভ্রান্তি। কোথাও কোথাও আদানিকে স্বস্তি দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার দেওয়া হচ্ছে ক্লিনচিট। কোথাও বলা হচ্ছে ২২ টি অভিযোগের তদন্ত শেষ হওয়ার পরেও সেবি বা আদানির বিরুদ্ধে কোন গাফিলতি বা গরমিলের অভিযোগের নাকি এখনও পর্যন্ত কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি। মানে নানাবিধ কৌশলে আদানি শিল্পগোষ্ঠীকে জনমানসে ‘ক্লিনচিট’ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে । কারণ আদানি শিল্পগোষ্ঠী বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ। আদানি কে নির্দোষ প্রমাণ করা মানে নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রীত্বে দুর্নীতির কালি না লাগতে দেওয়া।

কিন্তু বাস্তব হলো ৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি বহু আগেই গত বছরের মে মাসে জানিয়ে দেয়, ২০১৪ থেকে ২০১৯ এর মধ্যে, মানে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসবার পর থেকে সেবি বেশকিছু নিয়ম কানুনে এমন কিছু পরিবর্তন আনে যার ফলে এক্ষেত্রে সেবির নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে সমস্যা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বলে নেওয়া প্রয়োজন আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ হলো দেশের বাইরে বিভিন্ন ‘কর বান্ধব’ বা ‘ট্যাক্স হেভেন’ দেশে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর পরিচিত ও পরিবারের লোকজনদের দিয়ে বেনামে ‘শেল কোম্পানি’ খুলিয়ে তাদের মাধ্যমে ‘এফপিআই’ রুট দিয়ে দেশের শেয়ার বাজারে আদানি শিল্পগোষ্ঠীভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার কেনানো যাতে বাজারে এই শেয়ার গুলোর যোগান কমে যায় ও কৃত্রিম চাহিদা তৈরি হয় এবং ফলস্বরূপ শেয়ারগুলোর বাজারদর সর্বদা উর্ধমুখী থাকে। মানে সোজা কথায় আদানিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো কারচুপি করে দেশের বাজারে আদানি গ্রুপের কোম্পানি গুলোর শেয়ারের দাম বাড়ানোর।

যাতে এভাবে কেউ নিজের কোম্পানির শেয়ারের দাম না বাড়াতে পারে তার জন্য সেবির তরফে সুস্পষ্ট গাইড লাইন রয়েছে যে কোন সংস্থার মালিকগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে সর্বোচ্চ ৭৫% শেয়ার নিজের দখলদারিতে রাখতে পারে। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো বিদেশি বেনামি ‘শেল কোম্পানি’র মাধ্যমে তারা পরোক্ষভাবে তাদের বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ৯০% শেয়ারের মালিক যা বেআইনি। এখন এই অভিযোগ তখনই প্রমাণ করা সম্ভব যখন ঐ সমস্ত বেনামি ‘শেল কোম্পানি’র আসল মালিক কে বা কারা তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাবে।

কোন বিদেশী সংস্থা যখন আমাদের দেশের শেয়ার বাজারে লগ্নি করে তখন তাকে ‘সেবি’র কাছে তাদের কোম্পানির ‘আল্টিমেট বেনিফিসিয়াল ওনার’ বা কোম্পানির আসল মালিক কে সেই সংক্রান্ত হলফনামা বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হয়। ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসবার পর বিদেশী লগ্নিকারীদের সুবিধার জন্য সেই হলফনামার পদ্ধতি ও প্রকরণে এমন কিছু ‘লগ্নিবান্ধব’ পরিবর্তন আনে যার ফলে হলফনামায় ঐ সমস্ত লগ্নিকারী শেল কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের নাম না দিয়ে কোম্পানিগুলোর উচ্চপদস্থ কোন কর্তা বা ডিরেক্টরের নাম দিলেও চলে, যারা মূলত আসল মালিকানাধীন গোষ্ঠীর বেতনভূক কর্মচারি মাত্র। ফলে সেই পরিবর্তনের পরথেকে এই সমস্ত শেল কোম্পানি গুলোর আসল মালিক কে সেই তথ্য সেবির কাছে আর থাকছে না, তার জায়গায় থাকছে ঐ সংস্থার কিছু কর্মরত উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তির নাম। আর তাই আদানিদের মত কেউ বেনামে নিজের কোম্পানির ৯০% শেয়ার বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে কিনে রাখলেও সেবির পক্ষে তা ধরা সম্ভব হচ্ছে না। আর হিন্ডেনবার্গ কান্ডে নিযুক্ত ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি এমনই কিছু আইন পরিবর্তনের দিকেই আঙুল তুলেছে।

আর ঘটনাচক্রে এই মুহুর্তে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে তোলা ২৪ টি অভিযোগের মধ্যে যে দুটি অভিযোগের তদন্ত সেবি এখনও শেষ করতে পারে নি সে দুটিই হলো এই বেনামি ‘শেল কোম্পানি’র ‘আল্টিমেট বেনিফিসিয়াল ওনার’ সংক্রান্ত। মানে আদানিদের বিরুদ্ধে ওঠা মূল অভিযোগটার এখনও কোন পরিসমাপ্তি ঘটে নি। বরং তদন্ত বহাল আছে। ‘সেবি’কে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তৃতীয়বার অতিরিক্ত সময় দিল। এমনকি সেবি তদন্ত শেষ করতে না পারলে সুপ্রিম কোর্ট যে ভবিষ্যতে ‘সিট’ গঠন করবে না এমন কথাও কোথাও বলেনি।

এদিকে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর শেয়ারগুলোতে যে সমস্ত দেশের নথিভুক্ত ‘শেল কোম্পানি’র মাধ্যমে লগ্নি করা হয়েছে সেই সমস্ত দেশের নিয়ামক সংস্থার কাছ থেকে সেবি ঐ লগ্নিকারী শেল কোম্পানিগুলো সম্পর্কে বিশদে জানবার চেষ্টা করছে। কিন্তু ঘটনাচক্রে ঐ সমস্ত ‘করবান্ধব’ বা ‘ট্যাক্স হেভেন’ দেশগুলো ‘সেবি’কে সেইসব তথ্য দিতে বা জানাতে বাধ্য নয়। তারা সাধারণতঃ এই ধরণের বিদেশী অনুরোধে সাড়াও দেয় না। আর এখানেই গোল বেঁধেছে। সেবি’র যদিও বা তদন্ত করবার সদিচ্ছা থেকে থাকে তাদের হাত-পা বাঁধা! তারা যথাযথ সহযোগিতা পাচ্ছে না বাইরের দেশগুলোর থেকে। আর তাই গত জুন মাস থেকে এই ‘আল্টিমেট বেনিফিসিয়াল ওনার’ সংক্রান্ত দুটি অভিযোগের তদন্তেরও কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। আগামী দিনেও হবে বলে আমাদের মনে হয় না। মানে এই যে সুপ্রিম কোর্ট আরও ৩ মাস সময় দিল সেবিকে, তার মানে হলো আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে ওঠা অভিযোগগুলোর কোন সমাধান হচ্ছে না। সেদিক থেকে আদানি গোষ্ঠী কিছুটা হলেও স্বস্তিতে। নিশ্চিন্ত নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারও। কারণ তাদের আমলেই রীতিমত পার্লামেন্টে আইন পাস করে শেয়ার বাজার নিয়ামক সংস্থা সেবির বিদেশী লগ্নিকারীদের থেকে নেওয়া হলফ নামার চরিত্র বদল করা হয়েছে।

কথা ছিল চৌকিদার চোর ধরবে! কিন্তু চৌকিদার যে নিয়ম বদলে চোরকে পালাতে দেবে এমন কথা ছিল কি? প্রশ্নটা কিন্তু উঠছেই।

তবে আমাদের চৌকিদার তো শুধু চৌকিদার নন! ‘বিশ্বগুরু’ও বটে! তা সেই মহামহিম বিশ্বগুরু কি অবিলম্বে ট্যাক্স হেভেন দেশগুলোর দেশনায়কদের সাথে কথা বলে ঐ শেল কোম্পানিগুলোর মালিকানা সংক্রান্ত বিশদ তথ্য সেবি’কে এনে দিতে পারেন না! নিশ্চয়ই পারেন! আমরা রাইজ অফ ভয়েসেস তাই সেই দাবীটাই করছি।

আমরা চাই চৌকিদার চোর ধরুক!

এই ‘তারিখ পে তারিখ’ দেখবো বলে তো আর মোদিজীকে ভোট দেয়নি জনতা!

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস

তথ্যসূত্রঃ-
a) https://indianexpress.com/article/india/adani-supreme-court-verdict-sebi-probe-9092873/
b) https://www.livemint.com/news/adani-hindenburg-case-verdict-live-news-updates-supreme-court-sebi-stock-price-market-manipulation-11704242123080.html
c) https://www.anandabazar.com/india/supreme-court-declines-to-set-up-sit-in-adani-case-saying-it-will-not-interfere-with-sebis-probe-dgtl/cid/1485996
d) https://www.businesstoday.in/latest/corporate/story/adani-hindenburg-case-supreme-court-says-allegations-against-members-of-expert-committee-are-unsubstantiated-411673-2024-01-03
e) https://economictimes.indiatimes.com/news/india/adani-hindenburg-case-sebi-tells-sc-it-wont-ask-for-probe-timeline-extension/articleshow/105468045.cms
f) https://www.businesstoday.in/latest/corporate/story/adani-hindenburg-case-sc-allows-sebi-to-continue-probe-till-aug-14-389200-2023-07-11
g) https://indianexpress.com/article/india/adani-hindenburg-row-sebi-inability-deeply-worrying-congress-jairam-ramesh-8910663/
h) https://www.thehindu.com/news/national/explained-decoding-the-expert-committee-report-on-adani/article66985824.ece