নির্মল তোলাবাজি/ No Time to Resign!

এক সময় জেমস বন্ডের মুভি দেখতাম চোখ বড় বড় করে। “০০৭” আসছে, শত্রুর মুখোশ খুলছে, একের পর এক বাজিমাত করছে। কিন্তু আজকের দিনে সেই বন্ডের আসল উত্তরসূরি কে? আমাদের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন! তবে, তার মিশন? কোনো শত্রুর মুখোশ খোলা নয়, বরং ইলেক্টোরাল বন্ড দিয়ে টাকা তুলে ‘সব কা সাথ’ বাজিমাত করা।

হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন—এই কাণ্ডে সবাই জড়িত। বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল—সবাই! আর আমাদের নির্মলা সীতারামন হলেন এই বন্ড মিশনের নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন।

কেন্দ্রের শাসক একসময় মনে করেছিল, এই ইলেক্টোরাল বন্ড এমন একটা অস্ত্র যা দিয়ে তারা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবে—গোপনভাবে টাকা তুলে ভোটে জয়লাভও করবে, আবার ‘স্বচ্ছতা’র ঢোলও চড়াম চড়াম করে বাজাবে। কিন্তু হলটা কী? বেঙ্গালুরুর আদালত তাদের সেই ‘স্বচ্ছতা’কে ঢাকনাহীন করে দিল! নির্মলা দেবীর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়ে গেল! হা, হা, হা! আর এখন কী হবে? নো টাইম টু রিজাইন!

তবে দুঃখের বিষয়, কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি একাই এই খেলায় ছিল না। বর্তমান কেন্দ্রীয় বিরোধী দল কংগ্রেস ‘আমরাও আছি’ বলে মাঠে নেমে পড়েছিল সেই সময়! গোপনে, ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে তারাও নিজেদের ‘চামড়া’ পালিশ করেছে। মুখে, “এই বন্ডটা খুব পচা” গোছের বক্তব্য, আর ভিতরে ভিতরে চুপিচুপি নির্বাচনী তোলা সংগ্রহ করা। আসলে, কংগ্রেসের জন্য এই বন্ড যেন ডায়াবেটিস রোগীর কাছে লাড্ডুর মতন। রোগী লুকিয়ে লুকিয়ে লাড্ডু খেলেও, সতর্ক থাকে যাতে কেউ যেন দেখতে না পায়! কিন্তু এবার ধরা পড়ে, বলছে, “আমাদের দোষ নয়, ওরা খেতে দিয়েছিল!” বাহ্‌!

আর আমাদের রাজ্যের শাসক, তৃণমূল? উরি, উরি বাবা! মুখে তারা বলে, “আমরা সততার প্রতীক”, কিন্তু বন্ডের গোপন লেনদেনের ধান্দায় অনেক রথী মহারথীর থেকে এগিয়ে। বাংলার বাঘ বাঘিনীদের দল বলে কথা! কিন্তু এখন কি আর কারও মুখে কথা আছে? সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, “এই বন্ডটা আসলে একটা বিশাল চুরি!” আর তাই কারো কারো চোখে মুখে কান্নার সুর এখন, “আমরা কিচ্ছু হবে না ভেবে চুরি করতে গেছিলাম, কিন্তু এখন কী হবে?”

এখন আসি তাদের কথায়, যারা শুরু থেকেই বলছিল, “এই বন্ডের ধান্দা বন্ধ করো।” সিপিআইএম, এডিআর, আর কমন কজ প্রথম থেকেই দাবি করছিল, “এই ইলেক্টোরাল বন্ডে গন্ধ আছে!” কিন্তু কেউ প্রাথমিকভাবে এদের কথায় গুরুত্ব দেয়নি। কারণ? বড় বড় দলগুলো তো টাকার গন্ধেই মত্ত ছিল! আর যখন আদালত বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিল, সবাই অবাক! অবাক মানে, ধরা পড়ার পর চোর যেমন ‘আহা, কী করে ধরা পড়লাম?’—তেমনই।

সুপ্রিম কোর্ট যখন বলল, “এই বন্ডের মাধ্যমে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে,” তখন অনেকেই হয়ত মুখ নিচু করে ক্যালকুলেশন করছে, এই বন্ডের খেলায় কে তাদের বাঁচাবে! মুকুল রহতাগি, কপিল সিব্বল নাকি অভিষেক মনু সিংভি!

কিন্তু মোদ্দা ব্যাপার হল, নির্মলা সীতারামন এবার কী করবেন? জেমস বন্ড হলে হয়ত বলতেন, “লেটস প্লে, ইটস কুল।” কিন্তু নির্মলা দেবীর কাছে তো আর কোনো কুল থাকার রাস্তা নেই! আদালত এফআইআর দায়ের করতে বলেছে, এবার “No Time to Resign”!

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস