শান্তির দূত / Messenger of Peace

প্রিয় পাঠক,

আজকে আমরা সেই মহাপুরুষদের নিয়ে আলোচনা করব, যারা নিজেদের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে, নিরন্তর পরিশ্রম করে ফেক ভিডিও ও ফেক নিউজের ধ্বজাধারী হয়েছেন। আপনারা হয়তো ভাবছেন, এঁদের উদ্দেশ্য কী? শান্তি প্রতিষ্ঠা, নাকি ধ্বংসের বীজ বপন? কিন্তু না, আসল ব্যাপারটা অন্য রকম।

ফেক নিউজের কারিগররা: ২৪/৭ ব্যস্ত!

তারা শুধু আনন্দ নিতে চায়। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই শুনেছেন! সকাল থেকে রাত, রাত থেকে সকাল—ফেক ভিডিও আর ফেক নিউজ তৈরি করতে তারা ব্যস্ত। এক একজন তো ভাবছেন, “কী করে আজ নতুন কিছু বানিয়ে দুনিয়াকে আরও খানিকটা বিভ্রান্ত করব, সাথে বেশি বেশি লাইক পাব, রিচ পাব?” এ যেন এক নতুন ধরনের সৃজনশীলতা। তারা সৎ, কোনো ভাঁড়ামি নেই তাদের কাজে।

তাদের লক্ষ্য একটাই: যে কোনো মূল্যে সবার নজর কাড়তে হবে, বেশি বেশি করে লাইক পেতে হবে।

এবার আসি শান্তির প্রশ্নে। আপনারা যদি ভাবেন, এঁরা শান্তি চান না, তবে সেটা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ তাদের শান্তি মানে, সাধারণ মানুষের অশান্তি। তারা মানে, বিশৃঙ্খলা ছাড়া শান্তি আসে না। আর তাই তারা দিবারাত্রি নিদ্রাহীন হয়ে, হাজারো স্ক্রিনের সামনে বসে ফেক ভিডিও, ফেক নিউজ তৈরিতে মনোনিবেশ করে। গুজব ছড়ানো তাদের কাছে মস্ত বড় গুণ। তারা জানে, মানুষজন সত্যিটা না জেনে ফেক নিউজে বিশ্বাস করবে, আর ঠিক কিভাবে করবে। আর সেটাই তাদের চরম সাফল্য!

আপনি কি জানেন, তারা এমন এমন ফেক স্টোরি বানায়, যা দেখে মানুষ এক মুহূর্তে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ওঠে? তাতে কী আসে যায়, যারা দেখছে তাদের নাভিশ্বাস উঠুক, কিন্তু ফেক নিউজ তৈরির ক্ষেত্রে তাদের সাফল্যের পালক তো আরও বাড়ছে! অনেকে তাদের “ডিজিট্যাল টেরোরিস্ট” বলে সন্মান দিতে চায়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তারা আমাদের সমাজের নয়া টেক স্যাভি আতঙ্কি সম্প্রদায়। নিজেদের হাসি-ঠাট্টার জন্য তারা তৈরি করে মিথ্যে আতঙ্কের নিউজ অথবা ভিডিও। উদ্দেশ্য একটাই, মানুষজনের মধ্যে যতটা সম্ভব বিশৃঙ্খলা ও ভ্রান্তি ছড়ানো। এতে আনন্দ আছে, আছে সাফল্যের তৃপ্তি।

তাই, ফেক নিউজের স্বর্গরাজ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাকে স্বাগত!

ফেক নিউজ ছড়ানোর মেশিনগানরা জানে, সত্যিটা কোথাও নেই। তাই ফেক নিউজ বানানোই তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। সত্যি, তারা কেবল কল্পনার রাজ্যে বাস করে। বাস্তবের কোনো প্রয়োজন নেই। এসব নিউজ পড়ার পরে আপনি হয়তো ভাববেন, “এ কি! এতকিছুর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, আর আমি কিছুই জানি না!” তারা জানে, আপনি বিরক্ত হবেন, কিন্তু তাতে কী, তাদের তো কাজের স্বীকৃতি মিলছে! এমনকি, তারা নিজেদের শান্তির লক্ষ্যে ফেক নিউজ দিয়ে গড়ে তুলেছে এক নতুন দুনিয়া, যেখানে সত্যি-মিথ্যার বালাই নেই। শুনেছি এসব করে, অনেকে আবার বেশ ভাল ইনকাম-পত্তরও করেন। পপুলার হয়ে গেলে ফান্ডিংও আসে নানান দিক থেকে।

এঁরা সত্যিই একেকজন র‍্যাম্বো, তবে ডিজিট্যাল দুনিয়ার। এরা রাত জেগে আমাদের জন্য ফেক নিউজ আর ভিডিও বানায়, শুধু শান্তির প্রতিষ্ঠা করতে! তাদের স্বপ্ন, একদিন গোটা দুনিয়া ফেক ভিডিও আর ফেক নিউজের বন্যায় ভেসে যাবে, আর সবাই সেই শান্তির জোয়ারে তৃপ্ত হবে।

তাই, আপনারাও একটু সময় দিন, সেই শান্তি যোদ্ধাদের কাজকে সম্মান জানান। হয়তো একদিন এই ডিজিট্যাল টেরোরিস্টরা আপনার আমার জন্যে সত্যিকারের শ্মশানের শান্তির দূত হয়ে উঠবে! কিভাবে, সে না হয় আরেক দিন বলব।

ধন্যবাদান্তে
রাইজ অফ ভয়েসেস