স্টুডেন্ট ক্র্যাশ কোর্স / Hit and Run Syllabus

গতকাল শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি শিক্ষার্থীকে পিষে দিল। শাসক দলের নেতা মাইক হাতে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমরা চাইলে এক মিনিটে যাদবপুর দখল করতে পারি।” আর তারপর সাংসদ ঘোষণা করলেন, “২০২৬-এ আবার খেলা হবে।” ব্যস, এটুকুই যথেষ্ট বোঝার জন্য যে, এই শাসক দল শিক্ষা, যুক্তি, ছাত্র-ছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার—এসবের চেয়ে গুন্ডামিকে বেশি প্রাধান্য দেয়। গতকাল শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকার নিচে চাপা পড়লো একজন শিক্ষার্থী, আজ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের গলা টিপে ধরবে। এটাই শাসক দলের “এগিয়ে বাংলা” মডেল!

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী আসবেন, শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করবে—এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু শাসক দলের কাছে স্বাভাবিক কিছুই নেই। এখানে প্রশ্ন করলেই গায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কলেজ বিশ্ববদ্যালয়ে ভোট চাইলে গুন্ডা পাঠিয়ে জামা ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই মাথা ফাটিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এই দল একদিন শিক্ষিকাকে জগ ছুঁড়ে মেরেছিল, শিক্ষকদের মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখেছিল, চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যরাত্রে পিটিয়েছিল, এবার তাদের টার্গেট সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী।

অন্যদিকে বাংলার প্রধান বিরোধী দল এই নৃশংসতা দেখে মজা নিচ্ছে। কারণ এখানে মন্দির-মসজিদের গালগপ্পো নেই, তাই তারা আপাতত দর্শকের আসনে। তবে, আজ যদি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রের বদলে ‘বুদ্ধি করে’ ধর্মের নামে স্লোগান দিত, তাহলে এই দল প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে মিছিল করতো।

তা যাই হোক, এদিকে শাসক দলের আরেক মন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন, “আমরা এক মিনিটে যাদবপুর দখল করতে পারি।” এতদিন জানতাম, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে গেলে এন্ট্রান্স পরীক্ষা লাগে। এখন বুঝলাম, গুন্ডাগিরিই আসল যোগ্যতা! মেধা, দক্ষতা এসব শাসক দলের কেউ বোঝে না, তারা বোঝে শুধু গায়ের জোরে দখল নেওয়া, অত্যাচার করা। বরং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস যদি এতটাই ‘এক মিনিটের খেলোয়াড়’ হয়ে থাকেন, তাহলে আসুন, যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের সামনে আপনার সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর হিট এন্ড রানের কারণ দর্শে আপনার প্রতিক্রিয়া দিন! দেখা যাক, বিতর্কে টপ স্কোরার হয়ে সত্যিই যাদবপুর দখল করতে পারেন কিনা!

এই শাসক দল কত নিচে নামতে পারে, তার আর কোনো সীমা নেই। তারা এখন এখন ক্ষমতায় এসে ছাত্রছাত্রীদের গায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালায়। আজ শিক্ষার্থীদের পিষে দেওয়া হচ্ছে, কাল হয়তো চাকরিপ্রার্থীদের লাইনে বুলডোজার চালানো হবে, পরশু পথে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবাদীদের সামনে ট্যাঙ্ক নামবে! এই শাসক দল গণতন্ত্র বোঝে না, তারা বোঝে শুধু গায়ের জোর। তারা জানে, ছাত্ররা যদি ভোটাধিকার পায়, তাহলে ক্যাম্পাসে তাদের ঠাঁই হবে না। তাই ক্যাম্পাসে ভোট দিতে দেবে না, আন্দোলন করতে দেবে না, প্রতিবাদ করলে পেটাবে।

এদের থামাতে হবে। শাসক দল বলছে, “২০২৬-এ আবার খেলা হবে!” কিন্তু এবার খেলা হবে রাস্তায়, ক্যাম্পাসে, ভোটবাক্সে। খেলা হবে সুদীপ্ত, স্বপন, তিলোত্তমা, আনিসের মত আরো অনেক ছাত্রছাত্রীদের রক্তের দাগ মুছতে। খেলা হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। তবে তার আগে, শাসক দলের মুখোশ সম্পূর্ণ খুলে ফেলা প্রয়োজন। আর সেই কাজটা সবাইকে মিলে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করার সময় এসেছে।

ধন্যবাদান্তে,
রাইজ অফ ভয়েসেস